কলকাতা: অনেক আশা জুগিয়েও বাংলার মসনদ দখল করতে পারেনি বিজেপি। ফের একবার বাংলার শাসনভার হাতে পেয়েছে তৃণমূল। তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার দেখানো পথেই এ বার দিল্লি থেকে বিজেপিকে হঠানোর পরিকল্পনা করছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
আরও পড়ুন- শহিদ বেদীতে মাল্যদান, বিজেপির প্রতিবাদ অপ্রাসঙ্গিক, দাবি মুকুলের
মমতা জানিয়েছেন যে বাংলা দখলের জন্য বিজেপি অনেক পন্থা অবলম্বন করেছিল। প্রচুর টাকা খরচ করা ছাড়াও মাফিয়া এবং মাসল অর্থাৎ পেশিশক্তির ব্যবহার করেছিল। কিন্তু পারেনি। এখানেই শেষ নয়, কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকার কারণে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন- দিল্লিতে শহিদ সমাবেশে তৃতীয় শক্তির উত্থান, মঞ্চে চিদম্বরম, পাওয়ার, অকালি দল, সপা
সেই সঙ্গে ভোটের সময়ে নির্বাচন কমিশনকেও বিজেপি ব্যবহার করেছিল বলে অভিযোগ করেছেন মমতা। প্রথমত আট দফায় ভোট গ্রহণ, তারপরে রাজ্য জুড়ে সকল এসপি-ডিএমদের সরিয়ে দেওয়া হয়। আর সেই জায়গায় নিজেদের লোককে নিয়োগ করা হয়। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর রাজ্য়ের আইন শৃঙ্খলার দায় নির্বাচন কমিশনের। মমতার অভিযোগ সেই কমিশনকেই ইচ্ছে মত ব্য়বহার করেছে বিজেপি। কমিশনের দফতর যেন বিজেপির পার্টি অফিস হয়ে গিয়েছিল।
ইডি-সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দেখা গিয়েছিল কয়লা এবং গরু পাচার নিয়ে তদন্ত শুরু করতে। যা শুরু হয়েছিল ভোটের কয়েক মাস আগে। হানা দেওয়া হয় এমন কিছু ব্যক্তির বাড়িতে যাঁদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তৃণমূলের যোগ রয়েছে। প্রচারের ক্ষেত্রে বিপুল খরচ করেছিল বিজেপি।
সাম্প্রতিককালে ফাঁস হওয়া পেগাসাস বিতর্ক নিয়েও এদিন সরব হয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি দাবি করেছেন যে অভিষেক-পিকের উপরে নজরদারি চালানো হয়েছিল। সেই সঙ্গে তাঁর মোবাইল হ্য়াক করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, দলীয় বৈঠকের কথাও পেগাসাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে জেনে নিত বিজেপি। সেই অনুযায়ী রণকৌশল তৈরি করত।
আরও পড়ুন- বিচারপতি থেকে সাংবাদিক সবার ফোন ট্যাপ হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টকে সুয়োমোটো মামলার আবেদন মমতার
তারপরেও অধরা থেকে গিয়েছে বিজেপির বাংলা দখলের স্বপ্ন। যার কারণ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নির্বাচনের নীল নকশা প্রস্তুত করেছিল তৃণমূল। সেই রণকৌশলকেই এবার জাতীয় রাজনীতিতে প্রয়োগ করতে চায় তৃণমূল। এমনই পরিকল্পনা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। সেই কারণে সমস্ত অবিজেপি রাজনৈতিক দলগুলিকে একত্রিত হয়ে লড়াই করার আবেদন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গণতন্ত্র বাঁচাতে দিল্লির গদি থেকে বিজেপিকে সরানো ছাড়া আর অন্য কোনও উপায় নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি।