কলকাতা: ময়দান (Maidan), যেখানে কিছুটা অস্থিরতা ছিল, তা কোথাও যেন ধীরে ধীরে থেমে গেছে। জওহরলাল নেহরু রোডের (Jawharlal Nehru Road) মেট্রো স্টেশনের পাশ দিয়ে কিংবা পার্ক স্ট্রিট থেকে ময়দানে ঢুকলে মনে হতো, কিছুই ঘটছে না। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পরই এই জায়গায় বসবে এক বিশাল ব্রিগেড সমাবেশ। রেড রোডের দিকে চলতে চলতে চোখে পড়ছে লাল ঝান্ডার সারি, যা সোজা নির্দেশ করছে যে ময়দানের পেছনে অনেক কিছু প্রস্তুতির মধ্যে রয়েছে।
এদিকে মঞ্চের কাছে পৌঁছালে দেখা গেল নির্মাণশিল্পী ও কারিগরের দল ব্যস্তভাবে স্টেজ নির্মাণ করছেন। বাম কৃষক সভার নেতা অমল হালদার, খেতমজুর সংগঠনের নিরাপদ সর্দার, সিটুর দেবাঞ্জন চক্রবর্তী, যুব নেতা কৌস্তভ চট্টোপাধ্যায়সহ বহু পরিচিত নেতা–কর্মী মঞ্চের চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মাঝে মাঝে মাইকে বাজছে গণসঙ্গীত, উৎসাহের এক নতুন ঢেউ ছড়িয়ে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২১ জুলাই ইডেনে কেকেআর এর ম্যাচ, কতক্ষণ চলবে মেট্রো?
পাঁচ বছর আগের ইনসাফ ব্রিগেডের আগের দিন ময়দান এত নিরুত্তাপ ছিল না। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সিপিএমের ছাত্র–যুব ফ্রন্টের ওই ব্রিগেডের আগের দিন ময়দান সজীব ছিল। তবে শনিবার, একেবারে অন্য ছবি। ময়দানে বামেরা কেবল শ্রমিক-কৃষকদের অধিকার নিয়ে কথা বলবেন, আর তাদের দৃষ্টি এই আগমনের দিকে। তবে সেই একই ময়দান, যেখানে এত দিন আগে রেড ঝান্ডার সৈনিকরা সক্রিয় ছিলেন, আজ সেখানে বেড়াতে আসা তরুণ-তরুণী, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা, সান্ধ্যভ্রমণকারীরা ভিড় করেছে। এক বছর আগেও এই দিনগুলোতে ময়দান পূর্ণ ছিল লাল পতাকা ও কর্মীদের পদচারণায়, কিন্তু শনিবার তার অর্ধেকও নেই। যদিও বিশেষভাবে সক্ষম সিপিএম সমর্থক রবি দাসের মতো ডাই-হার্ড সমর্থক ট্রাইসাইকেল নিয়ে হাজির ছিলেন।
১৯৬৪ সালে সিপিএমের প্রতিষ্ঠার পর এত দীর্ঘ সময়ে বামেরা বহু ব্রিগেড আয়োজন করেছে। তবে ব্রিগেডের আগের দিন কখনওই ময়দান এত নিরুত্তাপ ছিল না, বলছেন সিপিএমের বহু প্রবীণ নেতা। কিন্তু এই নিরুত্তাপ সত্ত্বেও, আজ, রবিবারের বিকেলে ময়দান যেন ভরে উঠবে। এটা আশা করছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম শনিবার সন্ধ্যায় ব্রিগেডের প্রস্তুতি পরিদর্শনে গিয়ে জানান, “এত স্বেচ্ছাসেবক আসার কথা ছিল, তার থেকেও বেশি আসছেন। মানুষের সাড়া বোঝা যাচ্ছে, তারা নিজেদের স্বার্থে এসেছেন।”
মহম্মদ সেলিম আরও বলেন, “খেতমজুর ও চাকরিহারা মানুষদের জন্য কথা বলবে এই ব্রিগেড।” সিপিএমের প্রবীণ নেতা অমিয় পাত্র আরও বলছেন, “ধর্মের মাধ্যমে মানুষকে বিভক্ত করা হচ্ছে, যাতে তারা ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে। আমরা তাদের ঐক্যবদ্ধ করতে চাই, এঁরা আমাদের আসল শক্তি।”
ব্রিগেডে বক্তাদের মধ্যে সেলিম ছাড়া আর কেউ বিশেষ উচ্চপ্রোফাইল নয়। বাকিরা সিটুর অনাদি সাহু, কৃষক সভার অমল হালদার, খেতমজুর সংগঠনের নিরাপদ সর্দার ও বন্যা টুডু। তবে, প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—তাদের ভাষণে কি ময়দানে সাড়া ফেলবে? আজ, রবিবার বিকেলের এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গ এবং অন্যান্য জেলা থেকে কর্মীরা শহরে পৌঁছাচ্ছেন।
দেখুন আরও খবর: