কলকাতা: চাকরিহারাদের বিক্ষোভ ঘিরে রণক্ষেত্র শহর কলকাতার। কসবায় ডিআই অফিসে ঘেরাও অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। চাকরিহারাদের উপর পুলিশি লাঠিচার্জ ও লাথি, ঘুসি মারারা অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের আচরণে উঠেছে নিন্দার ঝড়। ঠিক কী কারণে কসবায় লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটল, বুধবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে সে কারণ স্পষ্ট করলেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভর্মা (CP Manoj Kumar Verma)। তিনি জানান, বাধ্য হয়েই ‘হালকা বলপ্রয়োগ’ করা হয়েছে। পুলিশ কারও বিরুদ্ধে নয়। পরিস্থিতি পুলিশকে বাধ্য করে বলপ্রয়োগ করতে। পুলিশের উপর প্রথম চড়াও হয়েছে। আমাদের ৬ জন আহত হয়েছেন। যদি ওদের কোথাও প্রোগ্রাম হয় আমাদের জানাক। আমরা ব্যবস্থা করে দেব। লোকাল পুলিশকে যেন জানানো হয় তাহলে লোকাল পুলিশ সাহায্য করে দেবে। পুলিশের কাছে ইন্টিমেশন দেওয়া হয়নি আগে থেকে। আমাদের কাছে জেনারেল ইন্টিমেশন অন্য সূত্র মারফত এসেছে। ওখানে কম ফোর্স ছিল। পড়ে ফোর্স গিয়েছিল।
বুধবার শহর কলকাতা থেকে জেলা দিনভর উত্তপ্ত থাকল চাকরিহারাদের ডিআই অফিস ঘেরাও অভিযানকে নিয়ে। এদিন সকালে চাকরিহারাদের একাংশ জড়ো হন কসবার ডিআই অফিসের সামনে। তাঁরা যাতে ভেতরে ঢুকতে না পারেন সেই জন্য আগে থেকেই ব্যবস্থা নিয়েছিল পুলিশ। ডিআই অফিসের গেটে তালা লাগিয়ে চাকরিহারাদের বাধা দিতে পুলিশ ব্যারিকেড বসিয়েছিল। গেট টপকে ভেতরে প্রবেশ করে তালা ভাঙার চেষ্টা চাকরিহারাদের। তালা ভেঙেই ডিআই অফিসে ঢুকলেন আন্দোলনকারীরা। ডিআই অফিসে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। চাকরিহারা শিক্ষকদের (Jobless Teachers) একাংশের ওপর লাঠিচার্জ (Lathicharge) করল পুলিশ (Kolkata Police)। চাকরিহারাদের লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ঘটনায় একাধিক চাকরিহারা শিক্ষক গুরুতর আহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। চাকরিহারারা প্রশ্ন করেন, “আজ তো তাঁদের স্কুলে থাকার কথা, হাতে পেন থাকার কথা, আজ রাস্তায় তাঁরা পুলিশের লাঠির ঘা খাচ্ছেন!
আরও পড়ুন: চাকরিহারা শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ পুলিশের, গুরুতর আহত কয়েকজন
পুলিশ লাঠিচার্জ যে করেছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। তিনি বলেন, কসবার ডিআই অফিসে হামলায় ৬ জন জখম। তাঁদের মধ্যে ১ জন হাসপাতালে। পুলিশ যখন আক্রান্ত হয় তখন বাধ্য হয়ে অ্যাকশন নিয়েছে। তবে চাকরিহারাদের মারধরের যে ছবি, ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে তা আংশিক সত্য বলেই দাবি কমিশনার। তিনি জানান, এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে ডিসিপির কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, লাথি মারার যে ছবি দেখানো হচ্ছে, সেটা একটা অংশ। পুরোটা নয়। যে ছবি দেখানো হচ্ছে সেটা অবশ্যই কাম্য নয়, তবে পুলিশ এমন অ্যাকশন কেন নিল, সেটাও দেখতে হবে। সাংবাদিক বৈঠকের শেষে মুখ্যসচিব এদিন আরও বলেন, “যদি কোনও অভাব অভিযোগ থাকে, তাহলে নির্দিষ্ট জায়গায় জানাতে হবে। নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া ঠিক নয়।
প্রসঙ্গত, এদিন দুপুরের এডিজি আইনশৃঙ্খলা জাভেদ শামিম রাজ্যের সমস্ত এসপি-কে নির্দেশ দেন, রাজ্যের যে সমস্ত ডিআই অফিসের সামনে চাকরিহারা শিক্ষকরা গিয়ে আন্দোলন করছেন, কোনও পরিস্থিতিতেই চাকরিহারা শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ করা যাবে না। কোথাও আন্দোলন, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ হয়, তাহলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। শান্তির পথে এবং আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়টি সামাল দিতে হবে।
অন্য খবর দেখুন