কলকাতা: বিধবংসী আগুনে (Fire Incident) তছনছ খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ বাজার (Khidirpur Bazar Fire)। রবিবার রাত ২টো নাগাদ ভয়াবহ আগুন লাগে খিদিরপুরের এই বাজারে। ব্যাবসায়ীদের দাবি, ভয়াবহ এই আগুনে পুড়ে ছাই অন্তত ১৩০০ বেশির দোকান। সোমবার বিধানসভা থেকে সোজা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অস্থায়ী দোকানের ব্যবস্থা করে দেওয়ার হবে। শুধু তাই নয় সরকারের তরফে বাজার তৈরি করে দেওয়ার হবে বলে জানান।
এদিন মমতা ঘটনাস্থল থেকে বলেন, সরকারের তরফে কোনও সার্ভে শুরু হয়নি। কী ভাবে আগুন লেগেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্ত তো হবেই। কীভাবে আগুন লাগল, কটা দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হল, কার কার নামে দোকান ছিল। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশেও তিনি বলেন, সিলিন্ডার ও এসির মোশিন গুলোকে মাঝে মধ্যে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। মানুষের জীবন চলে যেতে পারত। মার্কেট এখন সরাতে হবে। নতুন করে মার্কেট হবে। একটা জায়গা আমরা বেছে রেখেছিলাম, অন্য একটা কাজে, সেখানেই আপাতত বাজার সরানো হোক। সেখানে বাইরের কেউ আসবে না, এখানকার ব্যবসায়ীরাই আপাতত ব্যবসা করবেন।”
আরও পড়ুন: খিদিরপুর বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে ছাই একাধিক দোকান, ভয়াবহ অবস্থা…
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নতুন করে বাজার তৈরি করে দেবে সরকার। কোনও খরচ দিতে হবে না ব্যবসায়ীদের। কর্পোরেশন যে মার্কেটটি তৈরি করবে সেটা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হবে। থাকবে যথোপযুক্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। যতক্ষণ না নতুন মার্কেট তৈরি হবে ততদিন ব্যবসায়ীদের জন্য অস্থায়ী জায়গার বন্দোবস্ত করা হবে। তারপর নয়া বাজার যখন তৈরি করা হবে, তখন তাঁদের পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে আনা হবে। পুরো দোকান পুড়ে গেলে ১ লক্ষ টাকা এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের ৫০ হাজার টাকা দেবে রাজ্য। এজন্য দোকানদারদের এক পয়সাও দিতে হবে না। পুরো টাকাটাই দেবে রাজ্য। কার কার দোকান জ্বলে গিয়েছে, কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। সেই অনুযায়ী একটি রিপোর্টও তৈরি করা হবে।” আপাতত ওই অগ্নিদগ্ধ এলাকায় ব্যারিকেড করে দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, রবিবারের রাত পেরিয়ে সোমবার দুপুর পরও ওই মার্কেটের কোথাও এখনও জ্বলছে আগুন। কোথাও দেখা যাচ্ছে সাদা ধোঁয়া। চারিদিকে হাহাকার সর্বস্বান্ত ব্যবসায়ীদের। পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন খোদ দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু (Minister Sujit Basu)। তাঁর সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। দেরিতে দমকল আসায় মন্ত্রীর কাছে ক্ষোভ উগরে বাসিন্দারা। এই মার্কেটে শয়ে শয়ে দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। কারও বা দোকানে ছিল নগদ টাকা। কারও দোকানের ভিতরে ছিল প্রয়োজনীয় নথিপত্র। সব শেয হয়ে গিয়েছে আগুনের গ্রাসে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, অগ্নিকাণ্ডে কয়েক লাখ টাকার জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। সব কিছু হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। পথে বসার উপক্রম তাদের। কী করবেন কিছুই ভেবে পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।
দেখুন ভিডিও