কলকাতা: বিচার ব্যবস্থা নিয়ে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য ঘিরে রাজভবন-নবান্ন সংঘাত আরও তীব্র হল। এবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় অভিষেকের বিরুদ্ধে ৬ জুনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যসচিবকে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের তরফে কী কী করা হয়েছে তাও জানাতে বলা হয়েছে মুখ্যসচিবকে। সোমবার রাজ্যপাল টুইটে লেখেন, ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে যে সমস্ত কথা বলেছেন, তা ছোট করে দেখার বা এড়িয়ে যাওয়ার মতো বিষয় নয়। রাজ্যপাল এদিন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে এব্যাপারে একটি চিঠিও দেন। টুইটে সেই চিঠিও রাজ্যপাল অ্যাটাচ করে দিয়েছেন।
মুখ্যসচিবকে দেওয়া চিঠিতে রাজ্যপাল লিখেছেন, ওই সাংসদ বিচার ব্যবস্থাকে যেভাবে আক্রমণ করেছেন এবং তাকে কেন্দ্রীয় সরকারের তল্পিবাহক বলে তুলনা করেছেন, তা অতি বিপজ্জনক প্রবণতা। সাংসদ তাঁর ভাষণে বিচার ব্যবস্থাকেই কলুষিত করেছেন। রাজ্যপালের অভিযোগ, বিচার ব্যবস্থাকে ওই সাংসদ দুঃসাহসিকভাবে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন, যা সাংবিধানিক রীতিনীতির বাইরে। মনে হচ্ছে তিনি নিজেকে এত বড় ভাবেন, যেন তিনি আইনেরও ঊর্দ্ধে।
দীর্ঘ চিঠিতে রাজ্যপালের বক্তব্য, বিচার ব্যবস্থাকে এই ধরনের আক্রমণ করার অর্থ হল, এখানে আইনে শাসন বলে কিছু নেই, আছে শাসকের আইন। বিচার ব্যবস্থাকে এভাবে আক্রমণ করা উদ্বেগের বিষয়। দেখেশুনে মনে হচ্ছে, রাজ্যে গণতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টা ধ্বনিত হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির একটি সাম্প্রতিক মন্তব্যেরও উল্লেখ করেন। বিচারপতি এনভি রমনা এক অনুষ্ঠানে কয়েকদিন আগে বলেন, সংবাদমাধ্যমে, বিশেষত সামাজিক মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থাকে আক্রমণ করা খুব বেড়ে গিয়েছে। বিভিন্ন সংস্থাকে এ বিষয়টি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
আরও পড়ুন: Bimal Gurung: গুরুতর অসুস্থ বিমল গুরুং, চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সিকিমে
রাজ্যপাল আরও লেখেন, নন্দীগ্রাম ভোট মামলা নিয়েও ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ এবং অন্যরা গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে এক বিচারপতিকে সঙ্ঘবদ্ধভাবে টার্গেট করেছিলেন। তখনও তিনি মুখ্যসচিবকে ডেকে তাঁদের বিরুদ্ধে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। কিন্তু মুখ্যসচিব ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্তা অনীহা দেখান। এই অবস্থায় মুখ্যসচিবকে ৬ জুনের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।