নন্দীগ্রাম : শুভেন্দু অধিকারী-শিশির অধিকারীদের জন্য সে দিন নন্দীগ্রামের ওই রকম অবস্থা হয়েছিল ৷ অধিকারীরা পিছন থেকে তৃণমূলকে ছুরি মেরেছে ৷ নন্দীগ্রাম দিবসে নন্দীগ্রামের মাটি থেকে শুভেন্দু-শিশির অধিকারীদের বিরুদ্ধে এ ভাবেই সুর চড়াল তৃণমূল ৷ আর এই কাজটা যাঁকে সামনে রেখে করা হল, তিনি দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক-মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ৷ অধিকারীদের আক্রমণ করতে শোনা যায় শহিদ দিবসে উপস্থিত তাপস রায়, দোলা সেন, অখিল গিরি-সহ অন্য নেতাদেরও ৷ তবে এ দিন সব থেকে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন কুণাল ৷ তেখালির সভা থেকে শুভেন্দুকে মীরজাফর বলে কটাক্ষ করে তৃণমূলের মুখপাত্রের দাবি, ‘অধিকারীরাই পিঠে ছুরি মেরেছে’।
২০০৮ সালের ১০ নভেম্বর তৃণমূলের থেকে নন্দীগ্রাম ‘পুনর্দখল’ করে ‘সূর্যোদয়’-এর কথা বলেছিল সিপিএম। প্রতি বছর এই দিনটিকে ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ হিসেবে পালন করে তৃণমূল। সেই মতই বুধবার ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি শহিদদের স্মরণে একটি সভার আয়োজন করে। এই সভা থেকেই কুণাল শুভেন্দুদের আক্রমণ করে বলেন, “ওরা মীরজাফর। ওরাই সিপিএমকে নন্দীগ্রামে ঢুকিয়েছে। “
সে ঠিক কী ঘটেছিল ৷ সে কথাও শোনা যায় কুণালের গলায় ৷ ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “সিপিএম নন্দীগ্রাম ঘিরছে, সে দিন কিছুই জানতেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ছিলেন তৃণমূল ভবনে। ” তখন তৃণমূল ভবনে উপস্থিত ছিল কুণাল ঘোষ স্বয়ং ৷ সাংবাদিকতা সূত্রে ৷ সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে কুণাল বলেন, “পাশের ঘরেই ছিলেন মুকুল রায়। সেই সময় এসইউসিআইয়ের একজন ফোন করেন আমােকে ৷ খবর দেন চারপাশে জমায়েত হচ্ছে। সিপিএম সন্ত্রাস করবে। এখনই যেন কিছু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
আরও পড়ুন – প্রমাণ করুন আপনি কতটা সৎ, ‘চোর’ শুভেন্দুকে নিয়ে বিজেপির হাওড়া জেলায় কোন্দল
কুণাল বলেন, “এমন খবর পেয়ে তৎকালীন বিরোধী নেত্রীর নির্দেশে মুকুল রায় ফোন করেন শিশির অধিকারীকে। কিন্তু, শিশির অধিকারী জানান সব খবর ভুল। গুজব রটছে কান দেবেন না। আমরা দেখছি। কিন্তু, রাতে খবর পাওয়া যায় নন্দীগ্রামে হামলা হয়ে গিয়েছে। ” এরপরই কুণাল তোপ, “ওরা পিঠে ছুরি মেরেছে। ওরা সিপিএমকে ঢুকিয়েছে, মমতাদি কে খবর দেয়নি। আগে সিপিএমকে দিয়ে দখল করিয়েছে। তারপর ধ্বংসস্তুপের উপর নেতা হতে এসেছে। ও আসলে মীরজাফর ৷”
সে দিনের তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী আজ বিজেপিতে ৷ হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ৷ কিন্তু, ভোটে বিজেপির ভরাডুরির পর পায়ের তলায় মাটি আরও সরে যাচ্ছে দিন দিন ৷ আজ তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপির তরফে শহিদ দিবস পালন করা হয় ৷ টুইট করে শ্রদ্ধা জানান শুভেন্দু ৷ লেখেন, ‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনের জন্য যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন এবং যারা শক্তিশালী বামফ্রন্ট শাসনের স্বৈরাচারী কৌশলকে প্রতিহত করেছেন সেই শহিদদের কখনও ভুলব না। এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন – রাজ্যসভার টিকিট নিশ্চিত হলেই দুই ডাকসাইটে কংগ্রেস নেতা যোগ দিতে চলেছেন তৃণমূলে
Would never forget those who lost their lives for the Nandigram movement & those who resisted the mighty Left Front regime's autocratic tactics; that ultimately changed West Bengal's political landscape. pic.twitter.com/34luzqNFo8
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) November 10, 2021