কলকাতা: জন্মের প্রায় এক বছর পরেও মেলেনি বার্থ সার্টিফিকেট। এসেছে অভিযোগ। সেই কারণে শিশুর জন্ম শংসাপত্র পাওয়ার বিষয়ে জটিলতা কাটাতে এবার উদ্যোগ নিলেন কলকাতা পুরসভার বর্তমান প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। এ নিয়ে সোমবার মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে কথা বললেন ফিরহাদ হাকিম।
জন্ম শংসাপত্র নিয়ে কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের কাছে অভিযোগ জানিয়ে ফোন আসে গত শনিবার টক টু কেএমসিতে। আদি সপ্তগ্রামের বাসিন্দা শুভায়ু মল্লিক ফোন করে অভিযোগ করেছিলেন, আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর সন্তান গত বছরের ৩ ডিসেম্বর হয়েছে। তিনি শিশুটির জন্ম শংসাপত্র পাচ্ছেন না। এমনকি এই শংসাপত্র পেতে গিয়ে তাকে যে মাসের-পর-মাস হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সেই বিষয়টিও ফিরহাদের কাছে তুলে ধরেন।
সেদিনই মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন তিনি এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন। সোমবার তিনি সরাসরি মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলেন। কথা হয় স্বাস্থ্য আধিকারিক এর সঙ্গেও। সরকারি হাসপাতালগুলোতে জন্ম শংসাপত্র পেতে মানুষের যে সমস্যা হচ্ছে এবং সেই শংসাপত্র পরবর্তীকালে নাম বদল বা নতুন নাম নথিবদ্ধকরণ এর ক্ষেত্রে যে মানুষ সমস্যায় পড়ছে সেই বিষয়টি মুখ্য সচিবের কাছে তুলে ধরেন ফিরহাদ। মুখ্য সচিব বিষয়টি যত শীঘ্র সমাধানের আশ্বাস দেন। এমনকি তিনি এ ব্যাপারে সরাসরি মুখ্যসচিবকে একটি চিঠি লিখবেন বলেও এদিন জানান।
আরও পড়ুন- ভবানীপুর উপ নির্বাচনে মমতার বিপরীতে শুভেন্দু নয়: দিলীপ ঘোষ
সরকারি হাসপাতালে কোন শিশু জন্ম নিলে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশিকা অনুযায়ী- সেখান থেকে জন্ম শংসাপত্র দেওয়ার কথা। কিন্তু সদ্য জন্ম হওয়া শিশুর নাম তখন বেছে না নেওয়ায় শিশুটির পরিবারের কাছে জন্ম শংসাপত্র নামের জায়গায় “Unknown” বলে উল্লেখ করে দেওয়া হচ্ছে। এরপর যখন শিশুটির পরিবার নাম নথিভুক্ত করতে যাচ্ছে তখন হাসপাতাল থেকে সেই শিশুটির পরিবারের সদস্যদের হাসপাতালে দিনের-পর-দিন মাসের-পর-মাস ঘোরানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।
এমনকি কলকাতা পুরসভার যখন সেই সদ্য জন্ম হওয়া শিশুর পরিবারের সদস্যরা আসছেন, তাদেরকে পুরসভার বার্থ এন্ড ডেথ সেকশন থেকে বলে দেওয়া হচ্ছে, হাসপাতাল থেকে কোনরকম নথি আসেনি। অর্থাৎ হাসপাতাল থেকে রেজিস্টার না আসায় কলকাতা পুরসভা সেই সদ্য জন্ম হবার শিশুটির সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য অজানা থেকে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন- ভবানীপুর উপ-নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এরপরই সমস্যাটি যে ক্রমশ বাড়ছে তা বুঝতে পারেন মুখ্য প্রশাসক। তখনই তিনি কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নির্দেশ দেন, হাসপাতালগুলিতে থাকে মূল রেজিস্টার। কলকাতা পুরসভা আসে সাব রেজিস্ট্রার। তাই কলকাতা পুরসভা যাতে মূল রেজিস্টার টা দ্রুত চলে আসে এবং এখানে যাতে যাবতীয় নাম বদল নতুন নাম প্রবেশ করানো হয় সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে।
সোমবার রেজিস্টার এবং সাব-রেজিস্ট্রার সংক্রান্ত সমস্যা এবং নাম নথিভুক্ত – নাম বদল সংক্রান্ত যে চূড়ান্ত হয়রানি হচ্ছে তা মেটানোর জন্য মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম।