কলকাতা: আর এক সপ্তাহ পরেই ভবানীপুরে উপনির্বাচন (By Election)। হাইভোল্টেজ এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির টিকিটে লড়ছেন প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। জোরকদমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচার। এরই মধ্যে ভবানীপুর উপনির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে হলফনামা চাইল হাইকোর্ট।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে হলফনামা জমা দিতে নির্দেশ। কমিশনে প্রেস বিবৃতির ৬ ও ৭ নম্বর প্যারাগ্রাফ কোন পরিস্থিতিতে তৈরি হল? ভবানীপুর উপনির্বাচন না হলে সাংবিধানিক সংকট, তা কে লিখল? কমিশন না মুখ্যসচিব? সাংবিধানিক বাধ্যবাধ্যকতা একটি উপনির্বাচনে (By Election) কীভাবে আসল? পুরো বিষয়টি হলফনামায় স্পষ্ট করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চে মামলার পরবর্তী শুনানি।
আরও পড়ুন: কেন শুধু ভবানীপুরেই উপনির্বাচন? কারণ খুঁজল কলকাতা টিভি ডিজিটাল
মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, বেছে বেছে একটি বিধানসভার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিবের চিঠি লেখা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার সামিল। নির্বাচন কমিশনের বিবৃতির তালিকা থেকে ৬ ও ৭ নম্বর প্যারাগ্রাফ বাদ দিতে হবে অথবা হাইকোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। ওই দুটি প্যারাগ্রাফ, যা মুখ্যসচিব চিঠিতে লিখেছিলেন, তাতেই নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর চেষ্টার ইঙ্গিত রয়েছে।
রাজ্যের পাঁচটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন এবং দুটি কেন্দ্রে নির্বাচন বকেয়া ছিল। পুজোর আগে রাজ্যের বকেয়া নির্বাচন ও উপনির্বাচন মিটিয়ে ফেলার দাবি জানিয়েছিল তৃণমূল৷ সেই দাবি পুরোপুরি না মানলেও ৪ সেপ্টেম্বর কেবলমাত্র ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন৷ ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুর কেন্দ্রেও নির্বাচন হবে৷
আরও পড়ুন: নভেম্বর পর্যন্ত ১৪৪ ধারা, তা হলে কি ত্রিপুরায় দুর্গাপুজো হবে না? বিজেপিকে নিশানা মমতার
গত ১ অগস্ট বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানান, পশ্চিমবঙ্গের কোভিড পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। একই সঙ্গে জানান, যে সমস্ত কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে সেখানে বন্যা পরিস্থিতির কোনও প্রভাব নেই। ভার্চুয়াল বৈঠকে হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সংবিধানের ১৬৪ (৪) ধারার প্রসঙ্গ টেনে আনেন।
তিনি বলেন, সংবিধানের ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনও মন্ত্রী যদি ৬ মাসের মধ্যে বিধান পরিষদীয় দলের প্রতিনিধি হতে না পারেন সেক্ষেত্রে সংবিধানের নিয়ম মেনে তাঁর মন্ত্রিত্ব পদ খোয়া যাবে। তখন সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে। সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে রাজ্যে সাংবিধানিক সংকট এড়াতে ভবানীপুর কেন্দ্রে যাতে উপনির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের কাছে সেই আবেদন রাখেন মুখ্যসচিব।
আরও পড়ুন: ধর্ষণে বাধা, মধ্যপ্রদেশে তরুণীর চোখে অ্যাসিড ঢেলে ‘বদলা’, গ্রেফতার ২ যুবক
যাতে ওই কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন না ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচনে জিতে আসতে না পারলে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে হত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রাজ্যের এই বিশেষ আবেদন খতিয়ে দেখার পর ভবানীপুর ছাড়া বাকি ৪ টি কেন্দ্রে উপনির্বাচন আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। একই সঙ্গে রাজ্যের দুটি বিধানসভা কেন্দ্র সামসেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুর কেন্দ্রে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
অন্যান্য যে সকল রাজ্যে ভোট বাকি রয়েছে সেখানে উৎসব মিটলে তবেই দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে বলে জানায় নির্বাচন কমিশন।