কলকাতা: পথ চলতি বেসরকারি বাসে উঠেছেন, অথচ এক টাকা ভাড়া চাইছেন না কন্ডাক্টর। বদলে আপনার জন্য রাখা খালি আসন। অফিস টাইমের ভিড় এড়িয়ে হাওয়া খেতে খেতে পৌঁছে যাচ্ছেন কাজের জায়গায়। কর্মব্যস্ত সময়ে পথে ছুটছে খালি বাস। স্টপেজে দাঁড়ানো যাত্রীদের কন্ডাক্টর বলছেন, চলুন পৌঁছে দিচ্ছি গন্তব্যে, ভাড়া লাগবে না। এমনটাও হয় এই শহরেই! প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর চালু হয়েছে বাস-অটো-ট্রাম। পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চালানোর কথা থাকলেও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির জেরে পথে নেমেছে হাতেগোনা বেসরকারি বাস। ভিড় বাসেই গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে অনেককে। মালিকদের সাফ কথা, ভাড়া বৃদ্ধি অথবা বিকল্প ব্যবস্থা না হলে পুরোপুরি বাস চালানো সম্ভব নয়।
আর এই বাস চলছে বিনা ভাড়ায়। বাস চালাচ্ছে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। পরিষেবার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জয় বাংলা বাস পরিষেবা’। কাজের জায়গায় সময় মতো হাজিরা দিতে ভরসা সেই বেসরকারি বাস। এই পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পয়লা জুলাই থেকে ‘জাতীয় বাংলা সম্মেলন’ ওকলকাতা বাস-ও-পেডিয়া যৌথ উদ্যোগে শহরের পথে বিনামূল্যে বাস পরিষেবা চালু করেছে। পরিষেবা পেতে গেলে করতে হবে ছোট্ট একটা কাজ। ‘জয় বাংলা বাস পরিষেবা’র সাইটে গিয়ে অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করাতে হবে যাত্রীদের।
আরও পড়ুন : বাসের মধ্যে হাতেনাতে পাকড়াও ৪ মহিলা পকেটমার
কোভিড বিধি মেনে ২০ জনের বেশি যাত্রী নেওয়া হবে না। বুকিং করা না থাকলে বাসে সিট খালি থাকলেই তবেই পথ চলতি মানুষের জন্য মিলবে পরিষেবা। দিনের ব্যস্ততম সময় চিড়িয়ামোড়-হাওড়া ময়দান, হাওড়া ময়দান-সল্টলেক, সল্টলেক থেকে গড়িয়া স্টেশন পর্যন্ত মিলছে বাস পরিষেবা। কলকাতা বাস-পেডিয়ার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সৌম্যদীপ মিত্র জানিয়েছেন, লকডাউনে দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে কমিউনিটি কিচেনের ব্যবস্থা করেছিল ‘জাতীয় বাংলা সম্মেলন’।
সেবামূলক কাজে সেই পাবলিক ফান্ডিং-এর টাকায় এখন বিনামূল্যে বাস পরিষেবা দিতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা। জাতীয় বাংলা সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধব্রত দাস জানান, করোনা বিধিনিষেধে এখনও বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। শহরতলিতে নেই পর্যাপ্ত বেসরকারি বাস, যাতায়াতের সমস্যায় মানুষের পাশে দাঁড়াতেই উদ্যোগ। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অ্যাপ ক্যাব ও ট্যাক্সিতে যাতায়াত অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। কোভিড পরিস্থিতিতে এমন ‘সুহানা সফর’ রয়েছে আমার আপনার শহরেই।