কলকাতা: কসবা-কাণ্ডে (Kasba Incident) ল কলেজ (Kasba Law College) থেকে নমুনা সংগ্রহ করল ফরেন্সিক টিম। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর শুক্রবার রাতেই পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান বিশেষজ্ঞরা। কলেজে তল্লাশি চালিয়ে একটি ঘর থেকে হকিস্টিক বাজেয়াপ্ত করেছে তদন্তকারীরা। এছাড়া কমন রুমে মিলেছে রক্তের দাগ। সংগ্রহ করা হয়েছে নমুনা। পুলিশ সূত্রে খবর, ল’কলেজে ‘গণধর্ষণ’ এর অভিযোগের তদন্তে সাড়ে ৭ ঘণ্টার CCTV ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার দিন দুপুর ৩.৩০ থেকে রাত ১০.৫০ পর্যন্ত CCTV ফুটেজ উদ্ধার করা গিয়েছে। এবার অভিযোগকারিণীর বক্তব্যের সঙ্গে ফুটেজ মিলিয়ে দেখছে পুলিশ। কসবা কাণ্ডের তদন্তে সিট গঠন কলকাতা পুলিশের। চার সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী কমিটির নেতৃত্বে অ্যাসিট্যান্ট কমিশনার। ইতিমধ্যে নির্যাতিতা ও তাঁর বাবা-মার গোপন জবানবন্দি নেওয়ার জন্য় আবেদন করেছেন তাঁরা।
কসবা কাণ্ডে (Kasba Incident) পুলিশের (Kolkata Police) নজরে ল কলেজের সিসিটিভি ক্যামেরা। ওই ক্যামেরার আওতায় রয়েছে কলেজের ইউনিয়ন রুম চত্বর। শনিবার সকাল থেকেই পুলিশি প্রহরায় সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ (South Calcutta Law College)। গতকাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নমুনা সংগ্রহ করেছেন। ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক টিম ছেঁড়া চুল ও ধস্তাধস্তির প্রমাণ পেয়েছে। ঘটনাস্থল অর্থাৎ গার্ড-রুম অর্থাৎ যেখানে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ, সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সব নমুনা শনিবার ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভির ফুটেজ। ইউনিয়ন রুমের বাইরে কারা ছিলেন তা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে যাচাই করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। কলেজের সিসিটিভির হার্ডডিস্কও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে অন্তত ৫-৬টি সিসিটিভি রয়েছে, যেগুলি থেকে গুরুত্বপূর্ণ ফুটেজ পাওয়া যাবে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। সূত্রের খবর, সিসিটিভিতে দেখা গিয়েছে অভিযুক্ত অভিযোগকারিণীকে জোর করে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যে দোকান থেকে ইনহেলার কেনা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, আজ সেই দোকানের সিসিটিভিও পরীক্ষা করবে পুলিশ।
আরও পড়ুন: গলায় কামড়, যৌনাঙ্গে ক্ষত, কসবার নির্যাতিতার মেডিক্যাল রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য
পুলিশি বয়ানে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, কলেজের নিরাপত্তারক্ষীর ঘরেই গত ২৫ জুন সন্ধ্যায় তাঁর উপর নৃশংস অত্যাচার করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে দাবি করেন, ইউনিয়ন রুম থেকে তিনি যখন পালানোর চেষ্টা করেন, তখন কলেজের মেন গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। অভিযোগকারিণী আগেই জানান, ওইদিন গণধর্ষণের সময় তাঁর ভিডিও তুলে রাখা হয়। হুমকি দেওয়া হয়ছিল মুখ খুললে ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়া হবে। এক অভিযুক্তের মোবাইল থেকে সেই ভিডিওই পাওয়া গিয়েছে । আর কারও ফোন থেকে কোনও ভিডিও রয়েছে কি না বা ডিলিট করা হয়েছে কি না , তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।
অভিযোগকারিণী পুলিশের কাছে আরও জানান, ঘটনার দিন তাঁর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল, বারবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তারা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে জাননি। সম্মান বাঁচাতে অভিযুক্তদের পা-ও ধরেছিলেন। কিন্তু তাতেও তাঁকে ছাড়া হয়নি। এরপর তাঁকে ইনহেলার এনে দেওয়া হলে, তিনি কিছুটা সুস্থ বোধ করেন। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তাঁকে গার্ড রুমে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ টিএমসিপি নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনায় মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অভিযোগপত্রের ভিত্তিতেই এগোচ্ছে তদন্ত।
দেখুন ভিডিও