কলকাতা: দেখতে দেখতে কেটে গেল স্বাধীনতার সাত দশক৷ প্রতি বছর ১৫ অগস্টের দিন দেশজুড়ে ঘটা করে চলে স্বাধীনতা উদযাপন৷ লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী৷ ভারতের প্রত্যেক শহর এবং গ্রামে গঞ্জেও চলে পতাকা উত্তোলন৷ পাড়ায় পাড়ায় বাজে ‘মুক্তির মন্দির সোপানতলে কত প্রাণ হল বলিদান..’, ‘দিল দিয়া হ্যায় জান ভি দেঙ্গে..’র মতো জাতীয়তাবাদী গান৷ টিভি খুললেই শুধু দেশাত্মবোধক অনুষ্ঠান, গান আর সিনেমা৷ স্বাধীনতা পরবর্তী প্রজন্ম ছোট থেকে এভাবেই ১৫ অগস্ট দিনটি পালন দেখতে অভ্যস্ত৷
আরও পড়ুন: ১৫ অগস্ট, ১৯৪৭, লালকেল্লায় ভাষণ দিচ্ছেন জওহরলাল নেহেরু
কিন্তু দীর্ঘ বঞ্চনা, লাঞ্ছনা ও শোষণের পর যখন স্বাধীনতা এল সেই শোষিত মানুষের কাছে আজকের দিনটির অনুভূতি কেমন ছিল? তাঁরাই তো ছিলেন এই দিনটির সাক্ষী৷ মধ্যরাতে স্বাধীনতা অর্জনের পর কেমন ছিল পরের দিনের কলকাতার সকাল? জানতে হলে ফিরে যেতে হবে ৭৫ বছর আগে৷
মুক্তির স্বাদ সে বোঝে যে পরাধীন থেকেছে৷ ‘কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা’ সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে এসেছে এই স্বাধীনতা৷ তাই ২০০ বছর ধরে ইংরেজদের গোলামি, অত্যাচার সহ্য করার পর ১৯৪৭ সালে ১৫ অগস্ট যখন স্বাধীনতা আসে তখন কলকাতার রাজপথ জুড়ে শুধুই উৎসবের ছবি৷ পরের দিন সকালে আনন্দবাজার পত্রিকার প্রথম পাতায় বড় বড় করে লেখা, ‘নূতন-যুগ-সূর্য উঠিল ছুটিল তিমির রাত্রি’৷ ভোরের আলো ফুটতেই বাড়িতে বাড়িতে উড়তে থাকে জাতীয় পতাকা৷ সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরে হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে বাঙালি ছেলেরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়৷ চারিদিকে জনসমুদ্র আর হই হই রব৷ মুখে ‘বন্দেমাতরম’, ‘জয় হিন্দ স্লোগান’৷
আরও পড়ুন: ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস, ২০১৪ থেকে ২০২১ অষ্টমবার লালকেল্লায় ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর
আজ যত খুশি স্লোগান দেওয়ার দিন৷ বন্দেমাতরম বলার জন্য পুলিশ এসে ধরে থানায় নিয়ে যাবে না৷ আজ তাঁরা স্বাধীন দেশের নাগরিক৷ বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কথায়, ‘এই স্বাধীনতা উৎসবের বার্তা বহন করে নিয়ে চলেছে পথে পথে প্রভাতফেরির দল৷ পথের চারিধারে শুধু জাতীয় পতাকার জয়যাত্রা৷ চতুর্দিকে পত্রপুষ্পে তোরণ পতাকায় এতদিনের ঘুমন্ত রাজপুরী সহসা উঠেছে জেগে৷’