কলকাতা: ভবানীপুর উপনির্বাচনের ভোট গণনা চলছে৷ রাউন্ড যত এগোচ্ছে তত সেলিব্রেশনে মেতে উঠছে কালীঘাট৷ মহিলা থেকে বুড়ো- দলীয় পতাকা হাতে রাস্তায় তৃণমূল কর্মীদের থিকথিকে ভিড়৷ সবুজ আবির উড়িয়ে ‘খেলা হবে’ গানে চলছে উদ্দাম নাচ৷ প্রতি রাউন্ড গণনা শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এগিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়ার পরই উল্লাসে ফেটে পড়ছেন কর্মীরা৷ মুখে স্লোগান, ‘চোর চোর চোরটা, শিশিরবাবুর ছেলেটা৷’
আরও পড়ুন: গণনার শুরুতেই নেত্রীর এগিয়ে থাকার খবরে উচ্ছ্বাস কর্মী-সমর্থকদের
ভবানীপুরে মমতার জয় নিয়ে কোনও সন্দেহই ছিল না৷ তিনি কত ভোটে জিতবেন এটা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে৷ ভবানীপুর তাঁর ঘরের মাঠ৷ পয়া মাঠ৷ এই মাঠে আগেও খেলেছেন এবং হাসতে হাসতে জিতেছেন৷ ঘরের মাঠে খেলার অ্যাডভান্টেজ হল, সমর্থকদের বিপুল সমর্থন৷ এই বিপুল সমর্থনের উপর ভর করেই আগামী পাঁচ বছরের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী থাকা কার্যত নিশ্চিত করে দিল ভবানীপুর৷
চার মাস আগে এই সুযোগ পেয়েছিল নন্দীগ্রাম৷ দলবদল করে শিশিরবাবুর ছেলে বিজেপিতে চলে যাওয়ায় বেশ ঝুঁকি নিয়েই নন্দীগ্রামকে বেছে নিয়েছিলেন মমতা৷ প্রতিপক্ষের মাঠে ভাঙা পায়ে হুইলচেয়ারে বসে দাপটের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী৷ কিন্তু অল্পভোটের ব্যবধানে হেরে গিয়েছিলেন৷ ওই হার যেমন মমতা মেনে নিতে পারেননি, তেমনই পারেননি ভবানীপুরের তৃণমূল কর্মীরা৷ এক মমতা ভক্তের কথায়, ‘নন্দীগ্রামে কারচুপি করেছিল শুভেন্দু৷ ভোট চুরি করে দিদিকে হারিয়েছিল৷ তাই দিদি বিপুল ভোটে জিতলে শিশিরবাবুর গদ্দার ছেলেটাকে হারানোর স্বাদ পাব৷’ কালীঘাটের অলিতে-গলিতে তাই ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’ স্লোগানের চেয়ে সুপারহিট ‘চোর চোর চোরটা, শিশিরবাবুর ছেলেটা’ স্লোগান৷
আরও পড়ুন: উপনির্বাচনের ভোটগণনার পরেও হতে পারে হিংসা, আশঙ্কা প্রিয়াঙ্কার
শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের বিরোধী দলনেতা৷ দীর্ঘদিন রাজনীতি করছেন৷ সেই তুলনায় প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল নবাগতা৷ রাজনৈতিক মেধা, অভিজ্ঞতার দিক থেকে প্রিয়াঙ্কা মমতার তুলনায় অনেক অনেক পিছিয়ে৷ মমতার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তাঁকে ধর্তব্যের মধ্যেই রাখতে চাননি কর্মীরা৷ বিজেপি যতই প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে মমতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মুখ করে তুলে ধরার চেষ্টা করুক না কেন, তৃণমূল কর্মীরা এটাকে মমতা বনাম শুভেন্দুর লড়াই বলেই দেখেছিল৷ তৃণমূলের মমতার ডাই হার্ড ফ্যানদের কাছে, ভবানীপুরে দিদির জয় মানে শুভেন্দুর ‘ফেস লস’৷