কলকাতা: আদালতের রক্ষাকবচ সরতেই কয়লাকাণ্ডে (Coal Smuggling Case) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) ২১ মার্চ দিল্লিতে তলব করল ইডি (Enforecement Directorate)। পরের দিন দিল্লিতেই হাজিরা দিতে হবে অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Rujira Banerjee)। অভিষেক দম্পতি এবার দিল্লিতে হাজিরা দেন কি না, সেটাই দেখার।
বৃহস্পতিবারই বিধানসভায় স্বরাষ্ট্র-বাজেট বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। তিনি বলেন, ‘সিবিআই-ইডি যখন যাকে পারছে, ডেকে পাঠাচ্ছে। অভিষেককে দিল্লিতে ডাকা হচ্ছে, তাঁর স্ত্রীকে ডাকা হচ্ছে। শ্বশুর-শাশুড়িকে ডাকা হচ্ছে। এরপর ওর বাচ্চাটাকেও ডাকবে।’
গত বছর বিধানসভা ভোটের পর ৬ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে প্রথম অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। ওই দিন টানা প্রায় ৯ ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। এরপর সমস্ত নথি নিয়ে ফের দিল্লিতেই ২১ সেপ্টেম্বর অভিষেককে হাজিরা দেওয়ার জন্য সমন পাঠায় ইডি। একইভাবে দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকে। ইডির তলবের বিরুদ্ধে অভিষেক এবং রুজিরা, দুজনেই দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁদের আবেদন ছিল, দিল্লিতে নয়, কলকাতায় ইডির তদন্তকারীদের মুখোমুখি হতে রাজি আছেন।
আরও পড়ুন- Mamata Banerjee: ইউক্রেন ফেরতদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মমতার
কয়েকদফা শুনানির পর দিল্লি হাইকোর্ট রায়দান স্থগিত রাখে। উত্তরপ্রদেশ -সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফল প্রকাশ হওয়ার পরই দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি রজনীশ ভাটনগর অভিষেক এবং রুজিরার আর্জি খারিজ করে দেন। তারপরই ইডি সক্রিয় হয়েছে। অভিষেককে ২১ মার্চ এবং পরের দিন রুজিরাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে।
সম্প্রতি পুরভোটের প্রচার চলাকালীন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে একাধিকবার বলতে শোনা গিয়েছিল, উত্তরপ্রদেশের ফল প্রকাশের পরই দেখব কত ধানে কত চাল। সবাই এক এক করে ঢুকবে। সিবিআইয়ের কাছে আমাদের আর্জি, গরু ও কয়লা পাচারকাণ্ডে প্রভাবশালীদের শুধু ডাকলে চলবে না। তাঁরা বাইরে থাকবেন কেন? অভিষেকদের তলবে রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বুধবার বলেন, এই ভাবে তৃণমূলকে আটকানো যাবে না। সব দলের পিছনে একটা করে সিবিআই লাগিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন- Mamata Banerjee: কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপি আঁতাঁত হয়েছে, বিধানসভায় সরব মমতা
গত সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে ইডির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন কংগ্রেসকে। তাঁর অভিযোগ ছিল, ইডি সিবিআই কংগ্রেসকে কিছু বলছে না। তাদের নিশানায় শুধু তৃণমূল। কারণ তৃণমূল একাই বিজেপির বিরোধিতা করে যাচ্ছে। কংগ্রেসের মুখে বিজেপির বিরোধিতা শোনা যায় না। তারপর থেকেই মমতা-সহ তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা লাগাতার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে গিয়েছেন। কংগ্রেসও পালটা জবাব দিয়ে বলে, সিবিআই, ইডি অভিষেককে টার্গেট করায় তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটে ভাগ বসাতে গোয়ায় ঘাঁটি গেড়েছে।