কলকাতা: ‘ডেসপারেট টাইমস কল ফর ডেসপারেট মেজার্স।’ ইংরেজি প্রবাদবাক্যকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা। এক রোগীর কিডনিতে টিউমারের অস্ত্রোপচার শুরু হয়েছিল, প্রাথমিক ব্যবচ্ছেদও হয়ে গিয়েছিল। এ সময় আচমকাই অপারেশন থিয়েটারের আলো নিভে যায়। কারণ মেডিক্যাল কলেজে আগুন লেগেছে। ধোঁয়া বেরতে শুরু করতেই বন্ধ করে দেওয়া হয় হাসপাতালের যাবতীয় বিদ্যুৎ সংযোগ।
ফ্যাসাদে পড়েন চিকিৎসক এবং নার্সরা। অন্ধকারে অস্ত্রোপচার তো কোনওভাবেই সম্ভব নয়। খোঁজ পড়ে টর্চের কিন্তু আগুন লেগেছে হাসপাতালে, ধোঁয়ায় পরিপূর্ণ চতুর্দিক, লোকজন আতঙ্কে ছোটাছুটি করছেন। এ অবস্থায় টর্চ খুঁজতে যাওয়ার কোনও মানেই হয় না। উপায় হল, মোবাইল ফোনের টর্চের আলোতেই হল সফল অস্ত্রোপচার। রোগী এখন সুস্থ আছেন বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। নিঃসন্দেহে শহরের হাসপাতালের মুকুটে এ এক নয়া পালক।
আরও পড়ুন: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অগ্নিকাণ্ড, ঘটনাস্থলে দমকলের ৬টি ইঞ্জিন
মঙ্গলবার বিকেলে আচমকাই মেডিক্যাল কলেজের ইউপিএসসি (UPSC) রুমে আগুন ধরে যায়। সেন্ট্রাল এসি-এর ডাক্ট দিয়ে গোটা হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়তে থাকে কালো ধোঁয়া। আগুন যাতে অন্যত্র ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল। ঘটনাস্থলে যায় দমকলের ছ’টি ইঞ্জিন।
এদিন হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী এবং কর্মীরাই প্রথমে ইউপিএসসি রুমের ভিতর থেকে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখেন। এরপরেই হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়। জানা গিয়েছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে রাখা অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র প্রথম পর্যায়ে কাজে লাগানো হয়। পাশাপাশি খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও দমকলে। সংশ্লিষ্ট জায়গায় প্রচুর পরিমাণে দাহ্য বস্তু মজুত থাকার ফলে আগুন ছড়িয়ে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। শহরের অন্যতম ব্যস্ত সরকারি হাসপাতালে আগুন লাগার ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে।