ভ্যাকসিন প্রতারণা কাণ্ডে নয়া মোড়। কমিউনিটি হল তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে কসবা থানা এলাকার এক ব্যবসায়ীর থেকে ৯০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন দেবাঞ্জন দেব। বৃহস্পতিবার রাতে এ বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কসবা থানায় প্রতারিত ব্যবসায়ী লিখিত অভিযোগ করেছেন।
দেবাঞ্জন দেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, দেবাঞ্জন দেবের অফিস ছাড়াও তালতলা এলাকায় একটি গোডাউনে আছে। সেখানেই সে সমস্ত ধরনের জিনিস মজুত রাখত। কিন্তু বারবার বিভিন্ন কথায় তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করেছেন দেবাঞ্জন। তাই তাঁর কথায় বিশ্বাস করতে নারাজ গোয়েন্দারা। প্রয়োজনে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে তালতলার ওই গোডাউনে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও নিউমার্কেট থানায় কলকাতা পুরসভার ওএসডি দেবাঞ্জনের নামে প্রতারণা, তথ্য জালিয়াতি-সহ একাধিক ধারায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আরও পড়ুন: ভালো আছেন মিমি
ভ্যাকসিন কাণ্ডের তদন্তে নেমে একাধিক তথ্য এসেছে পুলিশ এবং পুরকর্তাদের হাতে। ভ্যাকসিন ক্যাম্প করার নামে বেশ কিছু টাকা তুলেছেন অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব। যেমন, সরলা ডেভেলপমেন্ট মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রাইভেট লিমিটেড। এই সংস্থার পক্ষ থেকে এনইএফটি-র মাধ্যমে ১ লক্ষেরও বেশি টাকা দেওয়া হয়েছিল দেবাঞ্জনকে। আরও বেশকিছু সংস্থার কাছ থেকে ভ্যাকসিন ক্যাম্প করার নাম করে টাকা তুলেছিলেন তিনি।
তদন্তকারীরা ক্যাম্প থেকে বহু অব্যবহৃত ভ্যাকসিনের শিশি বা ভায়াল উদ্ধার করেছেন। নমুনা ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে। তবে উদ্ধার হওয়া ভায়ালের গায়ে কোনও রকম ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট, ব্যাচ নাম্বার, কোম্পানির নাম, কন্টেনটস সম্পর্কে কোনও তথ্যই লেখা ছিল না। শিশিতে ছিল পাউডারের মতো কিছু পদার্থ। যার সঙ্গে ডিসটিল্ড ওয়াটার বা ওই জাতীয় কিছু মিশিয়ে তাকে কোভিড ভ্যাকসিন বলে চালানো হয়েছে। কলকাতা পুরসভার ডেপুটি সিএমওএইচ ডক্টর রনিতা সেনগুপ্ত কলকাতা টিভির ডিজিটাল টিমকে এই কথা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভুয়ো শিবির থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে চিন্তায় মিমি
ভুয়ো ভ্যাকসিন নিয়ে বহু মানুষ প্যানিক অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন। কারও গায়ে হাত-পায়ে প্রবল ব্যথা। কারও বা মাথায় যন্ত্রণা। বেশ কয়েক জনের জ্বর এসেছে বলেও জানা গিয়েছে। আবার কারও ত্বকে চুলকানি হয়েছে। তবে চিকিৎসকদের বক্তব্য, বড় ধরনের অসুস্থতা বা উপসর্গ নজরে আসেনি। কসবার ওই ক্যাম্পে প্রায় ২০০ জনের মত মানুষ ভুয়ো ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে থেকে ৭০ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছে রাজ্য সরকার।