ওয়েব ডেস্ক: ২০২৫ সালে শতবর্ষে পা রাখছে পূর্ব রেলের হাওড়া বিভাগ (Howrah Division)। শতাব্দীর এই দীর্ঘ পথচলায় যাত্রী পরিষেবায় বিপুল উন্নতির অন্যতম উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ‘রাজধানী এক্সপ্রেস’ (Rajdhani Express)। ষাটের দশকে কলকাতা ও দিল্লির মধ্যে যাত্রীর চাপ যখন লাগাতার বাড়ছিল, তখন হাওড়া স্টেশনকে কেন্দ্র করে ভারতীয় রেল এক আধুনিক, দ্রুতগামী ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ট্রেনের ভাবনা ভাবতে শুরু করে।
সেই প্রেক্ষাপটে ১৯৬৭ সালে হাওড়া-দিল্লি গ্র্যান্ড কর্ড রুটে শুরু হয় পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল। অবশেষে ১৯৬৯ সালের ৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে রাজধানী এক্সপ্রেস—ভারতের প্রথম সুপারফাস্ট এবং পুরোপুরি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রেন। প্রথমদিকে সপ্তাহে দু’দিন চললেও, স্বল্প সময়ের মধ্যেই এটি হয়ে ওঠে গতির প্রতীক। ১২০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে ছুটে চলা এই ট্রেন পিছনে ফেলে দেয় তখনকার কালকা মেল-কে, যার গতি ছিল ১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা।
আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিলের নির্দেশ নবান্নের
রাজধানী এক্সপ্রেস শুধু গতি নয়, যাত্রী পরিষেবায়ও ছিল অগ্রণী। উন্নতমানের খাবার, আরামদায়ক এসি কামরা, যাত্রাপথে সম্ভাব্য যেকোনও সমস্যা মোকাবিলায় বিশেষ প্রশিক্ষিত টেকনিক্যাল টিম—সবই ছিল এই ট্রেনের অঙ্গ। ট্রেনের গতি বজায় রাখতে রেলপথে আনা হয় কাঠামোগত পরিবর্তন, গেট কিপারদের দেওয়া হয় নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষ প্রশিক্ষণ। কারণ বহু স্তরপথেই সে সময় ছিল না সাবধানবার্তা বা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা।
বর্তমানে রাজধানী এক্সপ্রেস প্রতিদিন চলে—ছয় দিন ধানবাদ হয়ে এবং এক দিন পটনা হয়ে। ২০০০ সালে শিয়ালদা-দিল্লি রুটেও চালু হয় আরেকটি রাজধানী এক্সপ্রেস, যা পূর্ব ভারতের রাজধানী সংযোগকে করে তোলে আরও শক্তিশালী ও দ্রুতগামী।
রেল আধিকারিকদের মতে, রাজধানী এক্সপ্রেস কেবল একটি ট্রেন নয়—এটি ভারতীয় রেলের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ, যাত্রীসেবার প্রতি দায়বদ্ধতা এবং ঐতিহ্যের এক জীবন্ত প্রতীক। এক শতাব্দী অতিক্রান্ত হাওড়া বিভাগের গর্বের মুকুটে এই ট্রেন আজও ঝলমল করে নতুন করে।
দেখুন আরও খবর: