কলকাতা: নিজের শহরেই ফের উদ্বাস্তু। ঘর ছেড়ে আবার উঠতে হল হোটেলে। মেট্রোর সুড়ঙ্গের জন্য বউবাজারের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়ায় বাসিন্দাদের তড়িঘড়ি তোলা হয়েছে হোটেলে। তাঁদের মধ্যে অশীতিপর বৃদ্ধও যেমন রয়েছেন, তেমনই রয়েছে কচিকাঁচারাও। নিজের পছন্দের ঘর ছেড়ে হোটেলের একচিলতে পরিসরেই তাদের এখন আতঙ্কে সময় কাটছে। এই ঘটনার জন্য যাওয়া হয়নি স্কুলে। দেওয়া হল না পরীক্ষাও।
আরও পড়ুন: Bowbazar Firhad Hakim: ফাটল দেখতে বউবাজার যাচ্ছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম
সেন্ট পলসের ছাত্র নিকুঞ্জ সাউ। ক্লাস ফাইভে পড়ে। ১০ বছরের নিকুঞ্জর বৃহস্পতিবার অঙ্ক পরীক্ষা ছিল। বুধবারও বাড়ি ফিরে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু, রাতেই আচমকা এই পরিস্থিতিতে বাবা-মায়ের হাত ধরে বইপত্র নিয়ে পথে নামতে হয়। অঙ্কের সব হিসেব তখন মাথায় উঠেছে। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে রাতারাতি ঠাঁই হল হোটেলে। এদিন তার বন্ধুরা সবাই যখন পরীক্ষা দিচ্ছে, তখন হোটেলের একচিলতে ঘরে সে অনিশ্চিতভাবে বসে আছে।
নিকুঞ্জরই দিদি আকাঙ্ক্ষা। ওয়েল্যান্ড গোল্ডস্মিথ স্কুলের ছাত্রী। তারও এদিন স্কুল খোলা। কিন্তু, যাওয়া হয়নি। কবে সে যেতে পারবে, তাও জানা নেই।
আরও পড়ুন: Anubrata Mondal: বুকে ব্যথা, বেসরকারি হাসপাতালে অনুব্রত মণ্ডল
সবথেকে বড় দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে তাদের অশীতিপর বৃদ্ধ দাদু রতনলাল সাউকে। বয়স ও অসুস্থতাজনিত কারণে ভালো করে হাঁটাচলা করতে পারেন না। চোখের জ্যোতিও কমে এসেছে। কিন্তু, রাতে তাঁকেও কোনও রকমে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে আসা হয়েছে নতুন অস্থায়ী ঠিকানায়। রতনলালের নিজের বাড়ি ছিল এটা। গতবারও ফাটলের কারণে বেশ কিছুদিন ঠাঁইনাড়া হয়েছিলেন। আবার সেই ঘটনা। কিডনি ও সুগারের রোগীকেও তাঁর ওষুধপত্র, প্রেসক্রিপশন নিয়ে ঘরছাড়া হতে হয়েছে। এখন নিজের বাড়ি ছেড়ে আবার কতদিন এই পায়রার খোপে বাস করতে হবে জানে না সাউ পরিবার।