কলকাতা: বুধবার দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন সস্ত্রীক দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তারপর থেকে বঙ্গ রাজনীতির নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছেন দিলীপ। ধলের অন্দরে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। শুধু তাই নয় অনেকেই বলতে শুরু করেছেন দিলীপ ঘোষ এবার ফুল বদল করতে চলেছেন। এই বিতর্কের মধ্যেই মুখ খুলেছেন দাবাং দিলীপ। এদিন তিনি বলেন, যখন বিজেপি ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছে তখন তারা বিজেপি এসেছে। আজ তারা দিলীপ ঘোষের সমালোচনা করছে। এরা এক সময় আমাকে গো ব্যাক স্লোগান দিয়েছে। গাড়ি ভাঙচুর করেছে। তারা যখন বিজেপিতে এসেছেন তাদের বুকে জড়িয়ে নেতৃত্বের সুযোগ দিয়েছি। যাদের তৃণমূলে কোনও পরিচিতি ছিলনা তাদের বিজেপিতে পরিচিতি দিয়েছি। দিলীপ ঘোষ ৪১ শতাংশ ভোট দিয়েছে। এমএলে এমপি করিয়েছি। আমার কোনও দুঃখ নেই, আমি পার্টির স্বার্থে করেছি।
নাম না করে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা নেতাদের কটাক্ষ করে বলেন, ২০১৫ সাল থেকে মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে লড়াই করছি। তখন এই নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোলে খেলা করতেন। তার বাড়িতে গিয়ে উচ্ছিষ্ট খেতেন। বাড়ির সামনে লাইন দিয়ে বসে থাকতেন। এখন হঠাৎ বিজেপি হয়েছেন। এরকম যারা হঠাৎ বিজেপি হয়ে লাফাচ্ছেন, তারা সকালে বিজেপিতে প্রাতরাশ করেন। তৃণমূলের বাড়িতে লাঞ্চ করেন। আবার রাতে বিজেপিতে ফিরে এসে ডিনার করেন। দিলীপ ঘোষের দিকে কেউ আঙুল তুলে এইকথা বলতে পারবে? দিলীপ ঘোষ এখন দলে চার আনার ফ্রি মেম্বার। তার কোনো পদ নেই। কিন্তু দিলীপ ঘোষ বিজেপিতে আছে। কারুর টিকিট চলে যেতে বা চাকরি চলে যেতে একেবারে ইঁদুরের মতো হুহু করে বিজেপি ছেড়ে চলে গিয়েছিল। আবার হাওয়া ঘুরতে হুহু করে ফিরে আসছে। তারা যেন দিলীপ ঘোষের ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট না দেয়।
আরও পড়ুন: তৃণমূলে যোগ দিচ্ছিনা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানেন
তিনি বলেন, যারা এইসব বিশ্লেষণ করছেন তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ওরকমই। এদের অনেকে আমার পিছনে ঘুরঘুর করত। ১ লাখ ২ লাখ টাকার জন্য ঘুরত। কেউ আমার বিশেষজ্ঞ হয়ে গেছিল। কেউ আমার উপদেষ্টা হয়ে গেছিল। আবার জমা পাল্টে এখন আমাকে উপদেশ দিচ্ছেন। এরা সব অন্ন দাস। আর দিলীপ ঘোষ বুক ফুলিয়ে ঘুরবে। কারণ দিলীপ ঘোষ কারুর সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করে চলে না। যারা এখন টিভি তে এই কথা শুনছেন তাদের সবাইকে চ্যালেঞ্জ করছি, পারলে প্রমান দিন দিলীপ ঘোষ কখনও কোনোদিন কোনও তৃণমূল নেতাকে ফোন করেছে। মুখ্যমন্ত্রী ছেড়ে দিন। তারা দরকার হলে দিলীপ ঘোষ কে ফোন করেছে। কেউ বলতে পারবে না আমি কোনো অ্যাপ এর মাধ্যমে গোপনে ফোন করেছি। বা রাতের বেলা কালীঘাটের বাড়ি গেছি। দিলীপ ঘোষ লড়াই করেছিল। লড়াই করবে। দিলীপ ঘোষ বিজেপি টা বোঝে। যারা আজ হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই বলছে তারাই একটা হিন্দু মন্দির থেকে হিন্দুদের আলাদা করছে? বিজেপি তাই বলেছে কোনোদিন? কাশী বিশ্বনাথ মন্দির মোদী জি তৈরি করেছেন। কেউ বলেছে ওটা মোদির মন্দির? আমি বলছি ওই জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে যদি কেউ মাথা নত করে তাহলে সে তৃণমূল হয়ে যাবে? মানুষকে এতো বোকা ভাবেন আপনারা? সিপিএম একসময় বলতো ওই বিবেকানন্দ আর এই বিবেকানন্দ। ওটা নাকি আরএসএস এর বিবেকানন্দ। তৃণমূল বলতো রামায়ণের রাম আলাদা আর বিজেপির রাম আলাদা। আমরা সেটা মনে করিনা। পুরীর জগন্নাথ আর দীঘার জগন্নাথ এক। যার যেখানে ইচ্ছা গিয়ে প্রণাম করবেন। সবাই বলে বিজেপি মন্দির রাজনীতি করে। একশো বার করে। কিন্তু মন্দিরে মন্দিরে ভেদাভেদ করেনা। এরকম করলে বিজেপিকে হিন্দু মানুষ ভোট দেবে?
দিলীপ ঘোষ বলেন, আমার পন্থী কেউ নেই। আমি বিজেপি পন্থী। আমি সভাপতি ছিলাম। লোক আমার সঙ্গে ঘুরত। আমি এখন কেউ নই কিন্তু আমাকে লোক নেতা মনে করে, তাই আমার সঙ্গে ঘোরে। আমি মালদহ মুর্শিদাবাদ গিয়ে সভা করে এসেছি। আর কারুর ক্ষমতা আছে সভা করার। আমি সভাপতির নির্দেশে গেছি। মুর্শিদাবাদ এর লোক আমাকে ডেকেছে। কারণ তারা আমাকেই হিন্দুদের নেতা মনে করে। কারুর দম আছে জঙ্গিপুর গিয়ে সভা করার? দিলীপ ঘোষ করে এসেছে। কে আসল হিন্দু নেতা সেটা পাবলিক জানে। রাতারাতি হিন্দু নেতা হতে যেও না। হিন্দুত্ব সবাইকে ফিট করেনা।
দেখুন ভিডিও