কলকাতা: বিদ্রোহীদের নিয়ে অস্বস্তি বাড়ল বঙ্গ বিজেপিতে (West Bengal BJP)। নাম না করে শীর্ষ নেতৃত্বকে তোপ দাগলেন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur), বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার (Jayaprakash Majumder) সহ বিদ্রোহী শিবিরের একাংশ। শান্তনু ঠাকুরদের অভিযোগ, বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের একজন দলকে কুক্ষিগত করে রেখে দিয়েছেন। নিজের ইচ্ছে মতন দল পরিচালনা করছেন। নতুন নতুন কমিটি গঠন করেছেন। শুধুমাত্র রাজ্য কমিটিই নয়, শান্তনু ঠাকুরদের অভিযোগ, বিজেপির জেলা, ব্লক এবং বুথ স্তরের কমিটিকে নিয়েও। শীর্ষ নেতৃত্বের অপসারণ দাবি করে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের হুশিয়ারি দিয়েছেন শান্তনু ঠাকুররাও।
কলকাতা ও জেলার একাধিক বিজেপি বিদ্রোহী নেতা কলকাতার পোর্ট ট্রাস্ট গেস্ট হাউসে জড়ো হয়েছিলেন। আলোচনার মুল বিষয় ছিল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এক কাট্টা হয়ে কীভাবে পাল্টা শক্তি হিসেবে উঠে আসা যায়। নয়া নয়া করেই শান্তনু ঠাকুর জয়প্রকাশদের আক্রমণের তির দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দিকে। বিদ্রোহের আঁচ পেয়ে ঠিক দু দিন আগেই রাজ্য কমিটি বাদ রেখে বঙ্গ বিজেপির সমস্ত কমিটিকে ভেঙে দেয় নেতৃত্ব। কিন্তু তাতেও যে ক্ষোভ কমেনি তা এদিন শান্তনু ঠাকুরদের কথায় পরিষ্কার।
এর আগে বনগাঁয় জেলা কমিটি তৈরির সময় মতুয়াদের কোনও প্রতিনিধিকে সাংগঠনিক সভাপতির পদ দেওয়া হয়নি।তা নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠে। বনগাঁ, রানাঘাট, হাবড়া একাধিক এলাকার বিধায়করা দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেড়িয়ে যান। বেড়িয়ে যান অসীম সরকার (হরিণঘাটা), অম্বিকা রায় (কল্যাণী), সুব্রত ঠাকুর (গাইঘাটা), মুকুট্মনি অধিকারী (রানাঘাট দক্ষিন), অশোক কীর্তনিয়া (বনগাঁ উত্তর) সহ বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরও।
আরও পড়ুন Shantanu Thakur: বিজেপিতে মতুয়া বিরোধ বেড়েই চলেছে, শান্তনুকে নিয়ে বিব্রত দল
শান্তনু ঠাকুরের দাবি, যাঁদের হাত ধরে বঙ্গ বিজেপি দুই শতাংশ থেকে চল্লিশ শতাংশে উঠে এসেছে কমিটি গঠন করার সময়, তাঁদের কথা মনে রাখেনি নেতৃত্ব। বরং ডিসেম্বরে কমিটি গঠন করার পর দেখা গিয়েছে পুরানো ৯০ শতাংশ বিজেপি কর্মীকেই বাদ দেওয়া হয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্বকে ভুল বুঝিয়ে কমিটি গঠিত হয়েছে বলেই শান্তনু ঠাকুরদের অভিযোগ। বিদ্রোহের আঁচ এতটাই গুরুতর যে, নাম নয়া করে তাঁরা বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন Shantanu Thakur: বঙ্গ বিজেপিতে ‘হোয়াটসঅ্যাপ বিদ্রোহ’ তুঙ্গে, অস্বস্তি বাড়িয়ে গ্রুপ ছাড়লেন শান্তনু
একইসঙ্গে বিদ্রোহীদের দাবি, শাসক দলের এজেন্ট হয়েই বিজেপিকে বিপদে ফেলতে চাইছে কেউ কেউ। শান্তনু ঠাকুরদের পোস্টারে দেখতে পাওয়া গিয়েছে ওই একই বক্তব্য। পোস্টারে লেখা রয়েছে, তৃণমূলের দালাল, পচা বিজেপিরা দূর হাটো; সেটিংবাজ, চিটিংবাজ নেতা দূর হটো; পশ্চিমবঙ্গের বিজেপিকে শেষ করার চক্রান্তকারী সেটিং নেতারা সাবধান; দুনিয়ার জালি বিজেপি নেতারা এক হও; সাবধান, সাবধান, সাবধান, বিজেপিকে শেষ করে নিজেদের গোছানোর উদ্যোগ চলবে না। পচা বিজেপই বলতে কাদের দিকে অভিযোগ শান্তনু ঠাকুরদের? নাম বলতে চাননি বনগাঁর সাংসদ। কিন্তু হুশিয়ারি দিয়েছেন, শীর্ষ নেতৃত্ব দাবি না মানলে আরও বড় কোনও পদক্ষেপ করবেন।