কলকাতা: আবেগ যখন কাজ করে তখন মানুষের ঠিক-ভুল জ্ঞান থাকেন না। এই আবেগে পড়ে মানুষ অনেক সময় জালিয়াতির শিকারও হয়। কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় (Pahalgam Terror Attack) মৃত্যু হয়েছে পর্যটক বৈষ্ণবঘাটা পাটুলির যুবক বিতান অধিকারীর। তাঁর স্ত্রী সোহিনীর প্রতি সহানুভূতি জ্ঞাপন করছে গোটা বাংলা। সেই সহানুভূতি কি ক্রমে সন্দেহের রূপ নিচ্ছে? পহেলগাঁও জঙ্গিদের গুলিতে নিহত বিতান অধিকারীকে মৃত্যুকে সামনে রেখে টাকা (Bitan Adhikary Fund Collected) তোলা হচ্ছে।
কলকাতার পাটুলির বাসিন্দা বিতান থাকতেন ফ্লোরিডায়, কাজ করতেন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায়। কিছুদিন আগে দেশে ফিরেছিলেন বিতান। দেশে এসে বেড়াতে গিয়েছিলেন কাশ্মীরে, সেখানেই জঙ্গি হামলায় প্রাণ দিয়েছেন তিনি। অসহায় স্ত্রী সোহিনীর কান্না শুনেছে সারা দেশ, তিন বছরের ছোট্ট ছেলে এখনও বিহ্বল। মর্মান্তিক পরিস্থিতিতে বিতান অধিকারীকে নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে । স্যোশাল মিডিয়ায় ক্যাম্পেন শুরু হয়েছে, প্রয়াত বিতান অধিকারীর নামে টাকা তোলা। একটি থার্ড পার্টির মাধ্যমে লিঙ্ক জেনারেট করে চলছে এই অনুদান সংগ্রহ। স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ‘ফান্ড রেইজার’। তলায় লেখা ‘ইন লাভিং মেমোরি অফ বিতান অধিকারী’। ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৪৩৪ মার্কিন ডলার উঠে গিয়েছে। কেন এই টাকা তোলা হচ্ছে? কারা তুলছেন? এই টাকা কে পাবেন? এভাবে কি মানুষের সহানুভূতির আবেগকে কাজে লাগিয়ে টাকা তোলা যায়? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
লিঙ্কটি খুললে দেখা যাচ্ছে, বিতান অধিকারীর স্ত্রী সোহিনীর পক্ষ থেকে চলছে এই ক্যাম্পেন। লেখা আছে, ‘ফ্লোরিডার বাসিন্দা আমাদের প্রিয় বন্ধু বিতান ওঁর পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন। বিতানের পরিবার আর্থিকভাবে এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে, বাড়ির ঋণ, গাড়ির কিস্তি, সন্তানের ভবিষ্যৎ—সবকিছু অনিশ্চয়তায়। এই দুঃসময়ে আমরা ওঁদের পাশে দাঁড়াতে একটি ফান্ডরেইজার শুরু করেছি। আমাদের লক্ষ্য ৩ লক্ষ ডলার সংগ্রহ করা, যার পুরোপুরি বিতানের পরিবারকে দেওয়া হবে, যেন তাঁরা অন্তত আর্থিক দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পান।’
বিতানের স্ত্রীকে নিয়ে আরও একটা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। স্ত্রীকে নিয়ে আমেরিকার ফ্লোরিডায় থাকতেন বিতান। এক বাংলা দৈনিকে প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, সোহিনী আদতে ভারতীয়ই নন, তিনি বাংলাদেশের বাসিন্দা। আমেরিকায় থাকার ভিসা বাতিল হয়ে যাওয়ায় কলকাতায় ফিরতে বাধ্য হন তিনি। সোহিনীর মায়ের বিরুদ্ধেও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। এই সমস্ত অভিযোগ আর কেউ নয়, করেছেন বিতানের দাদা বিভূ অধিকারী। বিতানের পরিবারের তরফেই সোহিনীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছে। এমনকী তাঁর পাসপোর্ট বৈধ নয় বলেও দাবি উঠেছে। বিতানের স্ত্রীর মতো তাঁর মা-বাবাও ছিলেন বিতানের উপর নির্ভরশীল। বিদেশ থেকে বিতানের পাঠানো টাকাতেই বৃদ্ধ মা-বাবার সংসার চলত। ছেলের মৃত্যুর খবর সামনে আসতে অথৈ জলে তাঁরা। বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে কিছুই বলেননি প্রয়াত বিতানের স্ত্রী সোহিনী। যাননি সেখানে।
অন্য খবর দেখুন