কলকাতা: নাম সুভাষচন্দ্র গুপ্ত। বাড়ি দক্ষিণ কলকাতার বাঁশদ্রোণী। খালসা হাইস্কুলে ভোটার স্লিপ নিয়ে এলেও তাঁর কাছে ছিল না সচিত্র পরিচয়পত্র। সকাল থেকে আগাগোড়া উত্তেজনাহীন ভবানীপুর উপনির্বাচন আচমকায় সরগরম এই যুবকের সৌজন্যে। বৃহস্পতিবার ভবানীপুরের খালসা হাইস্কুল চত্বরে তাঁকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। যা পরে হাতাহাতির রূপ নেয়।
বিজেপির অভিযোগ, ওই যুবক ভুয়ো ভোটার। তৃণমূলই পরিকল্পিতভাবে তাঁকে ওখানে পাঠিয়েছে। তাঁর কাছে কোনও সচিত্র পরিচয়পত্র ছিল না। প্রশ্ন উঠছে কে বা কারা ওই যুবককে ওই স্কুলে পাঠাল? কীভাবে বা তিনি ভোটার কার্ড ছাড়া বুথে ঢুকলেন? স্কুল চত্বর থেকে কারাই বা তাঁকে বের করে নিয়ে গেল? কেনই বা দৌড়ে বুথ ছেড়ে পালালেন তিনি?
আরও পড়ুন: হুইলচেয়ারে বসে ভবানীপুরে ভোট দিতে এলেন ৭৪ বছরের বৃদ্ধ
বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল ওই বুথে যেতেই ঘটনার সূত্রপাত। ওই যুবক বুথ চত্বরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। প্রিয়াঙ্কা তাঁর নাম জানতে চান। ওই যুবক জানান, তাঁর নাম সুভাষচন্দ্র গুপ্ত। বাড়ি বাঁশদ্রোণী হলেও তিনি ভবানীপুর কেন্দ্রের ভোটার। এরপর কার্যত রণং দেহি মেজাজে দেখা যায় প্রিয়াঙ্কাকে। ওই যুবককে কার্যত হুশিয়ারির সুরে বিজেপি প্রার্থী বলেন, পরিচয়পত্র আনলে তাঁকে ছাড়া হবে।
ওই যুবক চেয়ার থেকে উঠতে গেলে তাঁকে রীতিমতো ধাক্কা মেরে বসিয়ে দেওয়া হয়। মাস্ক খোলার কথাও বলা হয়। এই অবধি সব ঠিকই ছিল। হঠাৎই কালো পোশাক পরা দুই ব্যক্তি ঘটনাস্থলে আসেন। এর পর তাঁরা ওই যুবককে স্কুলের ছাত্র বলে উল্লেখ করে সরিয়ে নিয়ে যান। প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল ওই যুবককে ‘চোর চোর’ বলে তাড়া করেন।
আরও পড়ুন: ভবানীপুরে ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ বিজেপি প্রার্থীর, উত্তেজনা খালসা স্কুলের বুথে
প্রশ্ন উঠছে, কালো পোশাক পরা ওই দুই যুবকের পরিচয় কী? ঠিক কী কারণে তাঁরা ওই যুবককে সরিয়ে নিয়ে গেলেন? এই প্রশ্নও উঠছে ভুয়ো ভোটার ধরার জন্য নির্বাচন কমিশন রয়েছে। কী কারণে অতিসক্রিয়তা দেখালেন বিজেপি প্রার্থী? কড়া নিরাপত্তা থাকার পরও ওই যুবক কীভাবে ওই এলাকায় প্রবেশ করল?
বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের অভিযোগ, তৃণমূল ওই বুথে ভুয়ো ভোটার পাঠিয়েছে। তৃণমূল শিবির অবশ্য অভিযোগ সেই অস্বীকার করেছে। রাজ্যের মন্ত্রী ববি হাকিম বলেন, ভুয়ো ভোটার ধরার জন্য কমিশন রয়েছে। উনি হয়তো বিষয়টি জানেন না। ভবানীপুরে সবাই মিলেমিশে ভোট দেয়। এখানে কোনও ভুয়ো ভোটার নেই।
এই ঘটনার জেরে বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে খালসা স্কুলের বুথে ভোট গ্রহণ। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের শুরু হয় ভোট গ্রহণ।
আরও পড়ুন: বিজেপিতে যোগ দেব না, স্পষ্ট বার্তা অমরিন্দরের