কলকাতা: শুক্রবার ফরাসি ছবির উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে (Inagration of the 1st French Film Festival) উপস্থিত ছিলেন বলিউড তারকা অনিল কাপুর (Anil Kapoor)। মিস্টার ইন্ডিয়ার হাত ধরেই এই উৎসবের শুভ সূচনা হল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে বিশেষ উপহারে অভিনেতাকে সম্মানিত করা হল ফরাসি চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজকদের তরফ থেকে। এইদিনের অনুষ্ঠানে বিশেষ উপহার পেয়ে পুরনো স্মৃতি সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন অভিনেতা।
ফরাসি চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজকদের তরফ থেকে অনিল কাপুরকে বিশেষ একটি ছবি উপহার দেওয়া হল। এই ছবির সাথে অভিনেতার এক দারুণ স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ছবিটি তুলেছিলেন বিখ্যাত আলোকচিত্র শিল্পী নিমাই ঘোষ (Nemai Ghosh)। যাঁকে প্রবাদপ্রতীম চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ডানহাত বললেও ভুল হবে না। অনিল কাপুর প্রথম যে ছবিতে অন্যতম মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, সেই সিনেমারই ক্যামেরার নেপথ্যে ছিলেন নিমাই ঘোষ।
আরও পড়ুন: কলকাতায় শুরু হল ফরাসি ছবির উৎসব
১৯৭৯ সালে উমেশ মেহেরা পরিচালিত ‘হামারে তুমহারে’ ছবিতে একটি ছোট্ট চরিত্র দিয়ে বলি ছবিতে পা রেখেছিলেন অনিল কাপুর। তারপর ১৯৮১ সালে এম এস সত্যায়ু পরিচালিত ‘কাঁহা কাঁহা সে গুজার গ্যায়া’ ছবিতে এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সুযোগ পান অভিনেতা। সেই ছবির কাজেই নিমাই ঘোষের সঙ্গে পরিচয় হয় অনিল কাপুরের। ছবির শুটিং চলাকালীন কলকাতার গ্র্যান্ড হোটেলের সমানে একটি গাড়ির সামনে একটি স্টিল ছবি তুলেছিলেন নিমাই ঘোষ। শুক্রবার সেই ছবি হাতে পেয়েই নিমাই ঘোষের স্মৃতিচারণা করলেন বলিউড অভিনেতা। ফরাসি ছবির উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে নিমাই ঘোষকে জীবনে দেখা অন্যতম সেরা ফটোগ্রাফার বলে সম্মানিত করলেন তিনি। পাশাপাশি এইদিন তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) কথাও। অনিল জানান, তিনি সত্যজিৎ রায়ের গুণমুগ্ধ ভক্ত।
মঞ্চে বক্তব্য দিতে গিয়ে অনিল কাপুল শোনালেন কলকাতার সঙ্গে তাঁর জড়িয়ে থাকা সম্পর্কের কথা। তিনি বললেন “আমার ফিল্ম জীবন শুরু হয়েছিল এই কলকাতা থেকেই।” একই সঙ্গে বাম সরকারের প্রশংসাও করলেন অভিনেতা। অনিল কাপুর বলেন, “৪৪ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যদি আমাদের ছবি ‘কাঁহা কাঁহা সে গুজার গ্যায়া’-র প্রযোজনা না করত তাহলে আমি অনিল কাপুর হতে পারতাম না”।
উল্লেখ্য, ফরাসি ছবির উৎসবের (FFF 2024) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে অনিল কাপুর যে সময়ের কথা বললেন, সেই সময় রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee)। তিনি সিদ্ধান্ত নেন অনিল কাপুরের ওই ছবির প্রযোজনা করবে রাজ্য সরকার। সেই সময় আরও অনেক কালজয়ী সিনেমার পেছনে বামফ্রন্ট সরকারের বিশেষ অবদান রয়েছে। যেমন সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমাটির প্রযোজক ছিল রাজ্য সরকার। তাছাড়া পরিচালক গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘দখল’ ছবিটিও রাজ্য সরকারের প্রযোজনার তৈরি হয়েছিল।
আরও খবর দেখুন