কলকাতা : রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা রাজ্য সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘হুমকি চিঠি’ কাণ্ডে গ্রেফতার এক চিকিৎসক-সহ তিন জন। ধৃতদের নাম অরিন্দম সেন, রমেশ সাউ এবং বিজয় কুমার কয়াল। সূত্রের খবর, অরিন্দম সেন চিঠিগুলি লিখতেন। ওই চিঠি টাইপ করতেন টাইপিস্ট বিজয়কুমার কয়াল। গ্রেফতার করা হয়েছে পেশায় ড্রাইভার রমেশ সাউকে। চিকিৎসক-সহ অভিযুক্তদের আজ, মঙ্গলবার আদালতে তোলা হবে।
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘হুমকি চিঠি’ ঘটনার তদন্তে নেমে সোমবার দুপুর ৩ টে ৪৫ মিনিট নাগাদ রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের বিজন সেতুর সামনে ১৯৩/২ নম্বর বাড়ির কাছ থেকে গ্রেফতার করা হয় বিজয়কুমার কয়ালকে। তাঁকে জিজ্ঞেসাবাদ করতেই উঠে আসে অরিন্দম সেনের নাম। বিজয়কুমার কয়ালের দাবি, অরিন্দম সেনের নির্দেশে ওই চিঠি টাইপ করে ছিল সে ৷
এরপর সোমবার প্রায় রাত ৮ টা নাগাদ পুলিশ গ্রেফতার করে মূল চক্রী অরিন্দম সেনকে। তাঁকে জেরা করে উঠে আসে পেশায় ড্রাইভার রমেশ সাউয়ের কথা। অরিন্দম সেন কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। সে নিজের ড্রাইভার রমেশ সাউকে দিয়ে চিঠির খসড়া পাঠাত বিজয়কুমারের কাছে ৷ জেরার মুখে ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, গত দু’বছর ধরে এরকম চিঠি একাধিক ব্যক্তিকে পাঠিয়েছেন। যার মধ্যে একটি হুমকির চিঠি ছিল আলাপনবাবুর স্ত্রী তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে। ওই একই দিনে শরৎ বোস রোড পোস্ট অফিস থেকে মোট ৭ টি চিঠি পাঠানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন – ‘রামকৃষ্ণ বড় অশিক্ষিত, রবীন্দ্রনাথও বেশিদূর পড়েননি’, বেফাঁস মন্তব্যে ফের চর্চায় দিলীপ
সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্পিড পোস্টে পাঠানো হুমকি চিঠিতে লেখা হয়েছিল, ‘Your husband will be killed. No body can save the life of your husband.’ বাংলায় যার তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘আপনার স্বামী মেরে ফেলা হবে। কেউ আপনার স্বামীকে বাঁচাতে পারবে না।’ সোনালিদেবীর অফিসের ঠিকানাতেই চিঠিতে পাঠানো হয়েছিল। তাতে সই ছিল গৌরহরি মিশ্র এবং মহুয়া ঘোষেরও। তাঁদের পরিচয় জানতে তদন্ত চালাচ্ছিল পুলিশ।
আরও পড়ুন – ‘অর্থ ও নারী চক্রে জর্জরিত বঙ্গ বিজেপি’, বিস্ফোরক তথাগত
অরিন্দম সেনকে জেরা করার পর জানা গিয়েছে, তাঁর টার্গেট রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা রাজ্য সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন না। টার্গেট ছিলেন চিঠিতে স্বাক্ষর করা ব্যক্তি গৌরহরি মিশ্র। যিনি অরিন্দম সেনের প্রতিবেশী। যাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল অরিন্দমের । ফলে, গৌরহরি নামের ওই ব্যক্তিকে অপদস্থ করার জন্য গোটা বিষয়টি ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে তাঁর নামে চিঠি পাঠান মূল অভিযুক্ত অরিন্দম সেন।