কলকাতা: সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের (South Calcutta Law College) মধ্যে ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ।গোটা ঘটনায় নাম জড়িয়েছে কলেজেরই দুই কর্মী ও প্রাক্তন পড়ুয়ার। নির্যাতিতা ছাত্রী প্রথম বর্ষের পড়াশোনা করে। তাঁর বাড়ি চম্পাহাটি। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ওই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কসবার আইন কলেজ গণধর্ষণে (Kasba Law College Student Molested) মূল অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্র তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা। পেশায় আইনজীবী। জানা যাচ্ছে প্রাক্তনী হলেও কলেজে নিয়মিত যাতায়াত ছিল মনোজিতের। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত প্রাক্তণ পড়ুয়া ২০২২ সালেই তার ডিগ্রি কোর্স সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু তারপরেও কীভাবে কলেজে অবাধ যাতায়াত রয়েছে তার? কলেজ সেখানে ৫ টায় বন্ধ হয়ে যায়, তার পর সন্ধার দিকে কলেজের মধ্যে কী করছিলেন তিনি? স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের যে কোনও কলেজ বিকাল ৫টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
নির্যাতিতার অভিযোগ,২৫ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিটের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সন্ধ্যায় কলেজের ইউনিয়ন রুমের পাশের একটি বাথরুমে প্রথমে আক্রান্ত হন নির্যাতিতা। পরে তাঁকে জোর করে পাশের একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ছিল মনোজিত। বাকি দুই অভিযুক্তের নাম জায়েব আহমেদ এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায়। নির্যাতিতা তরুণীর আরও অভিযোগ, ঘটনার সন্ধ্যায় সাড়ে সাতটা থেকে রাত ১০টা ৫০-এর মধ্যে কসবায় একটি আইন কলেজ চত্বরে ঘটে এই ঘটনা। বুধবার, ২৫ জুন এই ঘটনার পর নির্যাতিতা তরুণী কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। সাক্ষীদের বয়ানও রেকর্ড করে পুলিশ। চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যালে অভিযোগকারিণীর মেডিক্যাল টেস্ট হয়েছে। নমুনা সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে যাচ্ছে ফরেন্সিক টিম ।
আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় কলেজের মধ্যেই ‘ধর্ষিত’ ছাত্রী, গ্রেফতার ৩ অভিযুক্ত
জানা যাচ্ছে, মনোজিত কলেজের প্রাক্তনী হলেও কলেজে তাঁর নিয়মিত যাতায়াত ছিল। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সে জড়িত ছিল। কলেজে থাকাকালীন দাপুটে ছিল মনোজিৎ। এমনকি মারধরের ঘটনাতে নামও জড়িয়েছে বেশ কয়েকবার। পুরোনো ল কলেজে সিসিটিভি ভাঙায় অভিযুক্ত সে।কলেজের পরিচালন কমিটির সুপারিশে তাকে প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী স্টাফ হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। মনোজিতের ফেসবুক প্রোফাইলে লেখা রয়েছে— ‘সাংগঠনিক সম্পাদক, দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।’ কলেজের টিএমসিপি ইউনিটের প্রাক্তন ‘প্রেসিডেন্ট’ পদেরও উল্লেখ রয়েছে। এমন একজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মতো অভিযোগ উঠতেই ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। যদিও মনোজিতের দলে কোনও পদ আছে কিনা, তাই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
কলেজের ভাইস্ প্রিন্সিপাল জানালেন, মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র কলেজে জিবি রেজুলেশন এর মাধ্যমে প্রায় ৪৫ দিন ধরে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন। জিবি প্রেসিডেন্ট কে বিষয়টি জানানো হয়েছে পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে সকাল ন’টা থেকে চারটে পর্যন্ত কলেজ। তারপর কলেজে আর কারুর থাকার কথা নয়। কিন্তু সেখানে কি করে তারা ছিলেন সেটা দেখা হচ্ছে। আমি কলেজ সময়ের বাইরে কলেজের ভেতরে প্রাক্তনীরা থাকা নিয়ে বা পড়ুয়া থাকা নিয়ে আগেও অনেকবার অভিযোগ জানিয়েছি, নির্দেশ আছে। কাউকেই এই ঘটনায় রেয়াত করা হবে না।
অন্য খবর দেখুন