কলকাতা: বাইপাসের ধারে ছোট্ট অফিসটায় এখন স্থান সঙ্খুলান। বাড়িটাও বেশ পুরনো হয়েছে। সংস্কারের কাজে তল্পিতল্পা গুটিয়ে ঘাসফুল সংসার চলেছে অন্য ঠিকানায়। সেই কাজেই গতমাসের শেষের দিকে চলছিল ভবনের আসবাবপত্রের সাফাই। ধুলোবালি নাড়া পড়তেই ডানা ঝাপটে বেরিয়ে এলেন ধনদেবীর বাহন। এতদিনের নিরাপদ ঠিকানায় লোকজন হানা দেওয়ায় বেজায় বিরক্ত সে। গ্রাম বাংলায় প্রচলিত আছে, শ্বেত-শুভ্র পেঁচার আগমনে গৃহস্থের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। লৌকিক বিশ্বাস লক্ষ্মীদেবীর বাহনের আগমণ শুভ সূচনার বার্তা।আরও পড়ুন: প্রকৃতির থিমে সাজবেন জগন্নাথ
ডানায় গভীর চোট থাকলেও এখন তা অনেকটাই শুকিয়েছে। নিরিবিলিতে খেয়ে পড়ে দিব্যি দিন কাটছিল নিশাচরের। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন, চিন্তা কী? চিলেকোঠায় বসে দিনরাত দেখেছেন মন্ত্রী-আমলাদের আনাগোনা। কত রুদ্ধদ্বার বৈঠকের সাক্ষী। জিনিসপত্র সরানোর সময় লক্ষ্মীপেঁচাটি নজরে আসে কর্মীদের।পুরুষ পেঁচাটির ওজন প্রায় ১১ কেজি। এরা নিশাচর। রাতে শিকার ধরতে ঘুরে বেড়ায়। সাধারনত ধানক্ষেতে এদের অবাধ বিচরণ। ছোট ইঁদুর শিকার করতে পারদর্শী। বিজ্ঞান সম্মত নাম কমন বার্ন আউল। মাঞ্জা সুতোয় আহত হয়ে চিলেকোঠায় বসে ছিল ব্রাউন আউল। বনদফতরের কর্মীদের খবর দেওয়া হলে পেঁচাটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় তারা। ডানার ক্ষত সেরে উঠলেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে খোলা আকাশে। স্বাভাবিক দক্ষতায় সে যাতে উড়ে বেড়াতে পারে সেই চেষ্টাই করছে চিকিৎসকরা। কবে থেকে তৃণমূল ভবনে আশ্রয় নিল সে, কীভাবেই উড়ে এল পেঁচাটি তা অবশ্য জানা যায়নি। সবার নজর এড়িয়ে অস্থায়ী ঠিকানায় দিন কেটেছে তার। কর্মীদের বক্তব্য, সংস্কারের কাজ না হলে হয়তো কেউ জানতই না পেঁচার কাহিনী।