নিজেকে আইএএস অফিসার পরিচয় দিয়ে অনেক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতেন দেবাঞ্জন দেব। কিন্তু বাধা পড়ল তখনই, যখন কোভিশিল্ডের নাম করে জনে জনে সবাইকে ভুয়ো ভ্যাকসিন দিলেন। সমস্যা আরও জটিল হল যখন জানা গেল, দেবাঞ্জনের ভ্যাকসিন ক্যাম্প থেকে টিকা নিয়েছেন সাংসদ অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীও। এ বার সামনে এল দেবাঞ্জনের আরও এক কীর্তি। নিরাপত্তা রক্ষীর চাকরি দেওয়ার নাম করে রাজ্য সরকারের ছাপ দেওয়া ভুয়ো প্যাড বানিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন : ভুয়ো আইএএস অফিসার দেবাঞ্জনের কিস্সা
নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করতে গিয়ে দেবাঞ্জন দেবের আরও এক জালিয়াতি ধরা পড়ল। অরিন্দম নামে এক ব্যক্তিকে নিরাপত্তা রক্ষীর চাকরি দেওয়ার নামে নবান্নের প্যাড জাল করেন তিনি। সেই প্যাডে লেখা চাকরির দরখাস্ত জমা পড়ে। তারপর দেবাঞ্জনের নিরাপত্তা রক্ষীর হিসাবেও নিযুক্ত হন অরিন্দম। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত বিএসএফ অফিসার ছিলেন। অরিন্দম কলকাতা টিভির ডিজিটাল টিমকে জানিয়েছেন, তাঁকে প্রথমে কাজের প্রস্তাব দেওয়া হয়। তারপর ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে দেবাঞ্জন তাঁকে বেছে নেন। বেতনের বিষয়ে অরিন্দম বলেন, তাঁকে প্রথমে ৪১ হাজার বেতন দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু তাঁকে বেতনে দেওয়া হত ৩৪,৬০০টাকা। মালিক দেবাঞ্জনের আসল পরিচয় জানতে পেরে ক্ষুব্ধ অরিন্দম। দেবাঞ্জনের বিষয়ে এই সব কীর্তিকলাপ শুনে তিনি বলেন, ”আমি যদি বিএসএফ-এ থাকতাম, তা হলে ওকে গুলি করে মেরে দিতাম।” দেবাঞ্জন নিজের কার্যকলাপের ব্যাপারে কাউকে কিছু বুঝতে দেননি। যে কারণে প্রায় সাড়ে ৪ মাস ধরে দেবাঞ্জনের সঙ্গে কাজ করার পরেও কিছু বুঝতে পারেননি অরিন্দম। অরিন্দমের দাবি, দেবাঞ্জন কোনও নেতা মন্ত্রীকে চিনতেন না কিংবা তাঁদের কারোর সঙ্গে দেখা করতেন না। ওকেও কোনও মন্ত্রী চিনতেন না। কিন্তু যে সরকারি অনুষ্ঠান গুলিতে দেবাঞ্জন যোগ দিতেন, সেখানে কীভাবে তিনি নিমন্ত্রিত হতেন, সেই বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি তাঁর নিরাপত্তা রক্ষী। কেন এই নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন, এই উত্তরে অরিন্দম জানান, তাঁকে বলা হয়েছিল, দেবাঞ্জনকে কেউ বা কারা টার্গেট করেছে। তাই তাঁকে নিরাপত্তা রক্ষী রাখার অনুমতি দিয়েছিল সরকার। এই বিষয়ে সরকারের ওই ভুয়ো প্যাডে লেখা চিঠি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : বারবার বয়ান বদল, পুলিশকে বিভ্রান্ত করছেন দেবাঞ্জন