কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: পৃথিবীর ঠাকুমার প্রয়াণ। যদিও মৃত্যুকালে তাঁর আশা পূরণ হয়নি। ১২০ বছর পূর্ণ হওয়ার মাত্র কয়েক মাস আগেই ১১৯ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন বিশ্বের জ্যেষ্ঠতমা কানে তানাকা। জাপানি নাগরিক তানাকার জন্ম ১৯০৩ সালে। সেই হিসেবে জর্জ অরওয়েল তাঁর সমবয়সি। প্রায় ওই সময় থেকেই জাপান বিশ্বের শক্তিধর দেশ হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে।
তানাকার জন্মসালেই থিওদর রুজভেল্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। সপ্তম এডওয়ার্ড ব্রিটিশ রাজসিংহাসনে বসেছিলেন। মাদাম কুরি প্রথম মহিলা হিসেবে নোবেল জিতেছিলেন। অবাক হলেও সত্যি, ওই বছরই রাইট ভ্রাতৃদ্বয় প্রথম বিমান ওড়ানোর পরীক্ষা করেন এবং ত্যুর দে ফ্রাঁসে মঞ্চস্থ হয়। তার জন্মের পরের বছরই রাশিয়া জাপান আক্রমণ করে এবং পরাজিত হয়।
আরও পড়ুন:WB Weather Update: জয়সলমীরকে পিছনে ফেলে বাঁকুড়ায় রেকর্ড গড়ল তাপমাত্রা
৯ ভাইবোনের মধ্যে তানাকা ছিলেন বাবা-মায়ের সপ্তম সন্তান। জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিম ফুকুয়োকা এলাকায় জন্ম তাঁর। ১০০ বছর আগে মাত্র ১৯ বছর বয়সে বিয়ে হয় তাঁর। অল্প বয়সে বিভিন্ন ব্যবসা করেছেন তানাকা, যার মধ্যে নুডলসের দোকানও ছিল। তাঁর স্বামী ১৯৩৭ সালে চীন-জাপান যুদ্ধে লড়াই করেছিলেন এবং তাঁদের এক ছেলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়াই করে রুশ সেনার হাতে বন্দি হন। টোকিও ওলিম্পিকে তাঁর মশাল নিয়ে হাঁটার কথা ছিল। কিন্তু কোভিডের কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। জীবনের শেষ কয়েকটা বছর তাঁর বৃদ্ধাশ্রমেই কেটেছে। সেখানেও খুব ভোরে উঠতেন তানাকা এবং অঙ্ক ও ক্যালিগ্রাফি করে সময় কাটাতেন। লুডো ও দাবা গোছের খেলা খেলতেন খুব। চকোলেট তাঁর প্রিয় খাবার ছিল।
আরও পড়ুন: Child Vaccine: ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুদের কোভ্যাকসিনে ছাড়পত্র ড্রাগ কন্ট্রোলারের
তানাকার মৃত্যুর পর আপাতত তাঁর থেকে এক বছরের ছোট লুসিলে রানডন ১১৮ বছরে জীবিত রয়েছেন। ফরাসি সন্ন্যাসিনী সিস্টার লুসিলেই এখন জ্যেষ্ঠতমা। জাপানে এখন প্রবীণতম হলেন ১১৫ বছরের মহিলা ফুসা তাতসুমি, বাড়ি ওসাকায়।
সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিশ্বের মধ্যে বয়স্কদের বসবাস সবথেকে বেশি জাপানে। জাপানের এক-চতুর্থাংশের বেশি নাগরিকের বয়স ৬৫-র ঊর্ধ্বে। গত সেপ্টেম্বরে জাপানে শতায়ু নাগরিকের সংখ্যা ছিল ৮৬ হাজার ৫১০ জন। তার মধ্যে প্রতি ১০ জনের ভিতর ৯ জনই মহিলা।