কলকাতা টিভি ওয়েবডেস্ক: তিব্বত নিয়ে চীনের ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। প্রায় ছয় দশক পেড়িয়ে গেলেও আজও তিব্বতী ধর্মগুরু দলাই লামা কাঁটার মতোই বিঁধে রয়েছে বেজিংয়ের গলায়। কিন্তু নয়াদিল্লিতে দলাই লামার সঙ্গে বৈঠকে করে এবার সেই তিব্বতী কাঁটাকে খুঁচিয়ে তোলার চেষ্টা শুরু করল আমেরিকা। যারফলে স্বাভাবিকভাবেই এই বৈঠকের কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে চীনের পক্ষ থেকে। তিব্বত চীনের অবিচ্ছেদ্দ অংশ। দলাই লামার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে আমেরিকা। এদিন এই মর্মেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে কটাক্ষ করে বেজিং।
আরও পড়ুন: পেগাসাস প্রস্তুতকারী সংস্থার দফতরে তল্লাশি ইজরায়েল সরকারের
নয়াদিল্লিতে দলাই লামার প্রতিনিধি নংদুপ দংচুকের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিংকেন। বৈঠকে ইতিবাচক হয়েছে বলে দুপক্ষের তরফেই জানানও হয়। কিন্তু তারপরেই এই বৈঠক নিয়ে নিজেদের উষ্মা প্রকাশ করেছে বেজিং। এই প্রসঙ্গে চীনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপত্র ঝাও লিজিয়ান স্পষ্ট ভাষায় জানান, “তিব্বত চীনের অবিচ্ছেদ্দ অংশ, পাশাপাশি এটি সম্পূর্ণই চীনের আভ্যন্তরীন বিষয়। কোনও বিদেশী রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ মেনে নেবে না বেজিং।“ চীনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, তিব্বত ইস্যুতে মধ্যস্থতা করে চীনের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে উস্কানি দিতে চায় আমেরিকা। যদি তা হয়, তাহলে চীনও তাঁর স্বার্থরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। ভারতে নির্বাসিত তিব্বতীদের সঙ্গে মার্কিনিদের প্রকাশ্য বৈঠক জিংপিংয়ের অস্বস্তির কারণ বলেই মনে করছে কূটনৈতিকমহল।
আরও পড়ুন: অতিমারির মাঝেও নয়া সংসদ ভবন নির্মাণে ৩০০কোটি খরচ কেন্দ্রের
গতবছর ক্ষমতায় আসার পরেই চীন বিষয়ক নীতিতে তিব্বতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে গুরুত্ব দেবেন বলে জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তারপরে এবার ভারত সফরে এসে তিব্বতী প্রতিনিধিদের সঙ্গে ব্লিংকেনের বৈঠক সেই সম্ভাবনাকে আরও জোরদার করল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহালমহল।
উল্লেখ্য, ১৯৫৯ সালে মাও জে তুংয়ের আমলে তিব্বতের দখল নেয় চিন। সেইসময় তিব্বত ছেড়ে ভারতে লুকিয়ে পালিয়ে আসেন তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামা। ভারতে তাঁকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু। তারপর থেকেই তিব্বতকে কেন্দ্র করে ভারত-চিনের মধ্যে শুরু হয় রাজনৈতিক জটিলতা। দলাই লামা থেকে গালওয়ান সংঘাতের মধ্যে দিয়ে সেই ধারা আজও অব্যহত। শুধু ভারতেই নয়, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আজও স্বাধীনতার জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তিব্বতী শরনার্থীরা।