ওয়েবডেস্ক- ইরানের (Iran) পরমাণু প্রস্তাবের (Nuclear Proposal) প্ররিপ্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (US President Donald Trump) বক্তব্য, এবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার বলেছেন যে এই সপ্তাহে নতুন মার্কিন-ইরান আলোচনা (US-Iran talks)স্পষ্ট করে দেবে যে সামরিক পদক্ষেপ এড়ানোর জন্য পারমাণবিক চুক্তি সম্ভব কিনা, কারণ তেহরান (Tehran) সম্ভাব্য চুক্তির পাল্টা প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
সোমবার ট্রাম্প টেলিফোনে ইজরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর (Israeli Prime Minister Benjamin Netanyahu) সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, ট্রাম্প তাকে জানিয়েছেন, ইরানকে একটি ‘যুক্তিসঙ্গত’ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমরা এমন একটি সমঝোতায় যেতে চাই সেখানে ধবংস ও প্রাণহানি যেন না ঘটে। তবে সেটি সেভাবে কাজ না-ও করতে পারে, আমরা খুব শীঘ্রই সেটি জানতে পারব।
ট্রাম্প বলেন, আলোচনার পরবর্তী দফা বৃহস্পতিবার হওয়ার কথা থাকলেও প্রস্তুতি-সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে, সেটি শুক্রবার বা শনিবার হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ইরান কম মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার চাইছে, যা ২০১৫ সালের ওবামা প্রশাসনের অধীনে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী অনুমোদিত ছিল। তবে ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে সেই চুক্তি বাতিল করে দেন। ট্রাম্পের এখানে স্পষ্ট বক্তব্য, ইরান সমৃদ্ধকরণ চায়, কিন্তু তা সম্ভব নয়। তারা এখনও সেই জায়গায় পৌঁছয়নি। আমি এটা বলতে চাই না, কারণ বিকল্পটা খুবই ভয়াবহ। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, তারা আমাদের প্রস্তাব নিয়ে মতামত জানিয়েছে, কিন্তু আমি তাদের বলেছি, সেটি গ্রহণযোগ্য নয়।
আরও পড়ুন- NATO বনাম রাশিয়া! তৃতীয় বিশযুদ্ধ কি শুধুই সময়ের অপেক্ষা?
প্রসঙ্গত, গত ৩১ মে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে সর্বশেষ আলোচনা হয়। ইরান জানায়, তারা মার্কিন প্রস্তাবের কিছু ‘উপাদান’ পেয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি তখন বলেছিলেন, এতে ‘অস্পষ্টতা’ আছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ি সোমবার এক প্রেস বিফ্রিং দেওয়ার সময় বলেন, আমরা খুব শীঘ্রই ওমানের মাধ্যমে আমাদের নিজস্ব প্রস্তাব পাঠাব। এটি যুক্তিসংগত, যৌক্তিক ও ভারসাম্যপূর্ণ। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এ সুযোগের যথাযথ মূল্য দিতে বলব।’
ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মজিদ তাখত-রাভানচি জানান, তেহরানের প্রস্তাবিত কাঠামোতে একটি চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিষয়ে প্রাথমিক সমঝোতা হলে বিস্তৃত আলোচনা হতে পারে। তবে ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকার বলেছেন, মার্কিন প্রস্তাবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা নেই—যা তেহরানের জন্য অন্যতম প্রধান শর্ত।
গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে ইরান-সমর্থিত হামাসের হামলার পর ইজরাইল গাজায় অভিযানের পাশাপাশি ইরানকেও আঘাত করেছে। সোমবার ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল সতর্ক করে বলেছে, তাদের কাছে ইজরাইলে পারমাণবিক স্থাপনাসংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য আছে, এবং ইজরাইল আঘাত করলে পাল্টা হামলা হতে পারে।
বর্তমানে ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা ২০১৫ সালের চুক্তির ৩.৬৭ শতাংশ সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এটি পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের কাছাকাছি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চায়। তবে তেহরানের জবাব তাদের কর্মসূচির শান্তিপূর্ণ।
দেখুন আরও খবর-