কাবুল: শান্তিপূর্ণ সরকার চাইছি৷ আমরা আর কোনও প্রকার অশান্তি চাই না৷ কাবুল দখলের পর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেছিলেন তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। আফগানিস্তানে আটকে থাকা বিদেশি নাগরিকদের প্রতিও সহানুভূতির সুর শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। শরিয়ত আইন অনুযায়ী মহিলাদের অধিকার পাবেন বলেও আশ্বস্ত করেছিল তালিবানরা।
বাস্তবে কিন্তু অন্য চিত্র ধরা পড়ছে আফগানিস্তানে। বাড়ি বাড়ি ঢুকে রীতিমতো খানাতল্লাশি চালাচ্ছে তালিবানরা। আশরফ ঘনি সরকারের আমলে যে সব আধিকারিক আমেরিকা এবং ন্যাটো বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে বন্দুকধারী তালিব যোদ্ধারা। তালিবান বিরোধী মানুষদের বাড়িতেও যাচ্ছেন তারা। রাষ্ট্রপুঞ্জের গোয়েন্দাদের রিপোর্টে এই তথ্যের উল্লেখ রয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি রাষ্ট্রপুঞ্জের এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনেছে।
আরও পড়ুন: পুরুষ সঙ্গী ছাড়া রাস্তায় বেরনোয় তরুণীকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিল তালিবানরা
নরওয়ে সেন্টার ফর গ্লোবাল অ্যানালিসিস নামে একটি সংস্থা রিপোর্টটি তৈরি করেছে। সংস্থার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর ক্রিশ্চিয়ান নেল্লেমান জানিয়েছেন, তালিবান বিরোধীদের টার্গেট করা হচ্ছে। এর আগে যারা আমেরিকা এবং ন্যাটো বাহিনীকে সাহায্যে করেছিল তাদেরকেই মূলত টার্গেট করছে তালিবানরা। শরিয়ত আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তি দিচ্ছে তালিবানরা।কাবুল বিমানবন্দর যাওয়ার পথেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
তালিবানি শাসনে মহিলারা কেমন থাকবে, তা নিয়েও মঙ্গলবার মুখ খুলেছিলেন জাবিউল্লাহ। তালিবান মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, শরিয়ত আইন অনুযায়ী মহিলাদের যা যা অধিকার প্রাপ্য তা দেওয়া হবে। ইসলামের বেঁধে দেওয়া কাঠামোর ভিতরে মহিলারা সম্মানের সঙ্গে থাকবেন। আফগানিস্তানের মহিলাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করাতেও আপত্তি থাকবে তালিবানদের। কিন্তু আদপে তা হচ্ছে। মহিলা সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পথের কাঁটা তালিবান, প্রাণের ভয়ে কাজ ছেড়ে বাড়িতে মহিলা সংবাদকর্মীরা
গত রবিবার আফগানিস্তান দখল করে তালিবানরা। তারপর দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে চরম অরাজগতা। আতঙ্কে আফগানিস্তান ছাড়ছেন হাজার হাজার মানুষ। পালাতে গিয়ে তালিবানের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। আফগানিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে মিছিলেও অবাধে গুলি চালিয়েছে তালিবানরা। মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। ‘বদলা নয়, বদল চাই’ এর কথা মুখে বললেও তালিবানরা ‘বদলা’ নেওয়া শুরু করে দিয়েছেন।