কাবুল: দেশ থেকে বিদায় নিয়েছে মার্কিন সেনা। এবার সরকার গঠনই প্রাথমিক লক্ষ্য তালিবানের। তাই সেই লক্ষ্যে দ্রুত অগ্রসর হতে উদ্যেগী হল ‘কাবুলিওয়ালার দেশে’ সদ্য ক্ষমতা দখল করা কট্টরপন্থী ইসলামিক সংগঠনটি। শীঘ্রই কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্যালেস থেকে নয়া সরকার গঠন সম্পূর্ণ হবে বলে বৃহস্পতিবার তালিবানের তরফে জানানও হয়। তালিবানের প্রশাসনিক আধিকারিক আহমাদুল্লাহ মুত্তাকি এদিন সোশ্যাল মিডিয়া বক্তব্য রেখে এদিন এমনটাই জানান।
ক্ষমতা দখল করলেও এই মুহূর্তে লক্ষীর ভান্ডারের বেহাল দশাই এখন সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ তালিবানের। গত দুদশক দীর্ঘ লড়াইয়ের পর দেশে মৃত্যুর সংখ্যা ছা়ডিয়েছে ২ লক্ষ ৪০ হাজার। আজ আফগানিস্তানের অর্থনীতিও খাদের কিনারে টলমল। সুতরাং যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানকে সাজিয়ে তুলতে আগামী দিনে বিদেশী বিনিয়োগ একান্ত প্রয়োজন তাঁদের।এমন পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের অর্থের চাহিদা বাড়ছে। সার্বিক পরিকাঠামোর উন্নয়নে ১০ বিলিয়ন ডলার জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন দেশটির।
আরও পড়ুন: লন্ডভন্ড কাবুল বিমানবন্দরের কন্ট্রোলরুম, সারাতে টেকনিক্যাল টিম উড়িয়ে আনল তালিবান
Chaotic U.S. exit likely to crush Afghan economy – Fitch https://t.co/mtgfzDUuBd pic.twitter.com/BwT8ye276k
— Reuters (@Reuters) September 2, 2021
আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা ফিচের মতে, আফগানিস্তানের জিডিপি ৯.৭ শতাংশ হারে পতন হবে। আগামী বছর আরও ৫.২ শতাংশ হারে জিডিপি হ্রাস পাবে বলে জানানও হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশী বিনিয়োগ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়বে আফগানিস্তানের। সেই ক্ষেত্রে দেখার বিষয় বিনিয়োগের ঝুলি নিয়ে কতটা এগিয়ে আসে প্রতিবেশী চীন ও রাশিয়া। কারণ পাকিস্তান ছাড়া চীন ও রাশিয়াই তালিবানকে ‘বৈধ’ বলে সর্বপ্রথম স্বীকৃতি দেয়।
অন্যদিকে, তালিবান সূত্রে খবর, সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লা আখুন্দজাদাই খুব সম্ভবত দেশটির প্রধান নেতা নির্বাচিত হতে চলেছেন। তাঁর অধীনে থাকবেন একজন প্রেসিডেন্ট। হাইবাতুল্লার নির্দেশে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হবে। এছাড়াও হাইবাতুল্লাহ’র অধীনে তিন জন ডেপুটি থাকবেন। মালওয়াভি ইয়াকুব, হক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজুদ্দিন হক্কানি এবং আব্দুল ঘানি বরাদর।
আরও পড়ুন: ফেলে যাওয়া অস্ত্র আর মার্কিন বিমান পেয়ে উচ্ছাসিত তালিবান
উল্লেখ্য, ৯০’র দশকে তালিবানের নিষ্ঠুরতার ছবি এখনও ভুলে যায়নি বিশ্ব। তাই দু’দশক পর এবার বিদেশীদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিতে যথেষ্টই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে কট্টরপন্থী গোষ্ঠীটি। বর্তমানে লক্ষীর ভাড়াড়ের হাল ফেরাতে মৌলবাদের চাদর থেকে কতটা আধুনিক হতে পারে তালিবান। বিদেশী বিনিয়োগ টানতে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় নিজের গ্রহণ যোগ্যতা বাড়ানোই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ আখুন্দজাই-স্ট্যানিকজাইদের।