সারে: মহাকাশের যতটুকু দৃশ্যমান তার ৭০ শতাংশ জুড়ে আছে ডার্ক এনার্জি (Dark Energy)। এই রহস্যময় জিনিসকে দেখা যায় না, বোঝাও গিয়েছে খুব সামান্যই। বিজ্ঞানীরা এটুকু নিয়ে নিশ্চিত যে এই ডার্ক এনার্জির জন্য ব্রহ্মাণ্ড ক্রমাগত প্রসারিত হয়ে চলেছে। এই রহস্যময় ‘শক্তি’ সম্পর্কে আরও জানতে ১০ বছর ধরে মহাকাশে জরিপ করে চলেছে ডার্ক এনার্জি সার্ভে (DES)। সম্প্রতি নিউ অরলিয়ান্সে ২৪৩তম আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির মিটিংয়ে সেই জরিপের চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে।
ডিইএস-এর গবেষণায় যুক্ত ১০০-রও বেশি বিজ্ঞানী। তাঁদের একজন ইংল্যান্ডের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস চ্যান্সেলর এবং এগজিকিউটিভ ডিন রবার্ট নিকোল (Dean Nichol)। তিনি জানাচ্ছেন, সদ্য প্রকাশিত রিপোর্ট এই রহস্যময় শক্তিকে বুঝতে অনেকটা সাহায্য করবে। ‘কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট’ (Cosmological Constant) নামক তত্ত্বের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞানীরা তাঁদের পর্যবেক্ষণ যাচাই করার সুযোগ পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইসরোর ইতিহাস, সফলভাবে গন্তব্যে পৌঁছল আদিত্য এল ১
১৯১৭ সালে কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট তত্ত্বের জন্ম দেন কিংবদন্তি বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন (Albert Einstein)। সে সময়ে তিনি বলেছিলেন, মহাবিশ্ব না প্রসারিত হচ্ছে, না সঙ্কুচিত হচ্ছে। পরে অবশ্য তিনি এই কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট তত্ত্বটি নিজেই খারিজ করেন। পরে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেন, মহাবিশ্ব শুধু প্রসারিতই হচ্ছে না, প্রসারণের গতি নিয়ত বাড়ছে। নেপথ্যে সেই ডার্ক এনার্জি। ১৯৯৮ সালে এই শক্তির আবিষ্কার হতেই ফের আলোচনায় আইনস্টাইনের কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট।
ডিইএস-এর দীর্ঘদিনের গবেষণার ফসল হিসেবে উঠে এসেছে ডার্ক এনার্জির ইকুয়েশন অফ দ্য স্টেট-এর (Equation of State) এ পর্যন্ত সেরা পরিমাপক। ইকুয়েশন অফ স্টেট হল নির্দিষ্ট চাপ, তাপমাত্রা, আয়তনে কোনও পদার্থের অবস্থা (যেমন তরল, কঠিন, গ্যাসীয়)। বিজ্ঞানীরা এই পরিমাপকের নাম দিয়েছেন ইংরেজির ছোট হাতের ডব্লিউ (w)। এই ডব্লিউ-এর মান বলে দেয় পদার্থটি গ্যাসীয় কি না, নাকি সে তরলের মতো আচরণ করছে। ডার্ক এনার্জি-কে বুঝতে হলে তার ইকুয়েশন অফ স্টেট আগে বোঝা দরকার। বিজ্ঞানীদের ডব্লিউ নিয়ে সেরা থিওরি-র অনুমান, তার সঠিক মান হওয়া উচিত মাইনাস ১ (w= -1)। অনুমান এও বলছে, আইনস্টাইনের কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্টই হল ডার্ক এনার্জি।