ওয়েবডেস্ক- বালুচিস্তানের (Balochistan) স্বাধীনতার লড়াইকে রুখতে এবং বালোচদের স্বাধীনতার লড়াইকে দমন করতে, এবার ব্রিটিশ আমলের রাওলাট আইনকে (Rowlatt Act of the British era) ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিল পাকিস্তান সরকার (Pakistan Government)।
বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তানের অন্তর্গত বালুচিস্তানের সাধারণ মানুষ স্বাধীনতার ও স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে দাবি জানিয়ে আসছে। তারা চায় না পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত থাকতে।
বিগত কয়েক মাস ধরে বালুচিস্তানের স্বাধীনতার লড়াই তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে। দেশের একাধিক বিচ্ছিন্নতাকামী সংগঠন ইতিমধ্যেই স্বাধীনতা প্রাপ্তির ঘোষণা করে দিয়েছে।
লাগাতার পাকিস্তান সেনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর মাধ্যমে ক্রমে বালুচিস্তানের রাশ পাকিস্তান সরকারের হাতের বাইরে চলে যেতে বসেছে।
এমত অবস্থায় বালুচিস্তানকে হাতের মুঠোয় রাখতে,, এবং তাদের আন্দোলনকে রুখতে করা পদক্ষেপ নিতে চলেছে পাকিস্তান।
আরও পড়ুন- প্রতিবাদ, সংঘর্ষ, টিয়ার গ্যাস! কেন অশান্ত লস অ্যাঞ্জেলস?
সম্প্রতি ৪ জুন পাকিস্তান সরকারের নির্দেশে,,, বালুচিস্থান বিধানসভায় সংশোধিত নতুন আইন পাস করা হয়েছে। Counter terrorism act 2005 (Balochistan amendment),, সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, চার্জ গঠন না করে আদালতে পিস না করেও যেকোনও কাউকে ৯০ দিন পর্যন্ত বন্দী করে রাখা যেতে পারে। নতুন আইনে দেশের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রভূত ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
বলা হয়েছে সেনা হোক বা গোয়েন্দা সংস্থা বিনা বিচারে চার্জ গঠন না করেই কাউকে ৯০ দিন পর্যন্ত বন্দী করে রাখা যাবে।
এ প্রসঙ্গে পাক সরকার জানিয়েছে, পুলিশ ও গুপ্তচর সংস্থার আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত যৌথ তদন্তকারী দল যেকোনও কাউকে বন্দী করার নির্দেশ দিতে পারবে। যে কাউকে শনাক্ত করতে পারবে। যখন ইচ্ছে তল্লাশি অভিযান চালাতে পারবে। বিচার বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আটক করতে পারবে। নাগরিকদের গতিবিধির ওপর নজরদারি চালানোর যে কমিটি রয়েছে তাতে এখন থেকে সেনা আধিকারিকদেরও উপস্থিতি থাকবে।
এই আইন পাস হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানের বিশেষ করে বালুচিস্তানের মানুষের মধ্যে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
দেশের সমাজকর্মী মানবাধিকার কর্মী থেকে শুরু করে বালুচিস্তানের প্রতিবাদীরা একযোগে এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। আমাদের মতে নাগরিক শৃঙ্খলা এবং সামরিক অভিযান এতদিন বিভাজিত ছিল যা নতুন আইনের মাধ্যমে মুছে দেওয়া হল। নাগরিকদের উপর নজরদারি চালানো দমন নীতি প্রয়োগ এবং বালুচিস্তানের মানুষের ওপর শোষণ চালানোর ছাড়পত্র দেওয়া হল পুলিশ সেনা ও গোয়েন্দাদের। এই আইন অনেকটা পাকিস্তানের স্বাধীনতা পূর্ব ব্রিটিশ আমলের “রাওলাট আইনের” সঙ্গে সমতুল্য।
নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনে সেই সময় রাওলাট আইনের দ্বারা বিনা বিচারে গ্রেফতার ও অত্যাচারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। যার বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের সূচনা ঘটেছিল। পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন, অ্যমিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, সংশোধিত এই আইনের তীব্র নিন্দা করেছে। তাদের প্রত্যেকের মতে, দমন প্রিনের উদ্দেশ্যে এই আইন পাকিস্তান সরকার বলদ করলেও, এর মাধ্যমে বালুচিস্থানের স্বাধীনতার আন্দোলন কে আদৌ দমন করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।
দেখুন আরও খবর-