কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: মঙ্গলবার গভীররাতে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোতোবায়া রাজাপক্ষ তাঁর দ্বীপ রাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করেন। ২২৭৪/১০ নম্বরের একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতি বলেন, তিনি জরুরি শাসন অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করছেন৷ অর্থাৎ, দেশে যে কোনও ধরণের অশান্তি রোধে নিরাপত্তা বাহিনীকে যে ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
চরম অর্থনৈতিক সংকটে জেরবার শ্রীলঙ্কা৷ যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে। প্রতিরোধে ১ এপ্রিল থেকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। পাল্টা হাজার হাজার সাধারণ নাগরিক রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত বাসভবনের বাইরে জড়ো হয়ে তাঁর পদত্যাগ দাবি করে। পরে সরকার দ্বীপ জুড়ে কারফিউ জারি করে। কারফিউ এবং জরুরি অবস্থা সত্ত্বেও ক্ষমতাসীন দলের বরিষ্ঠ ব্যক্তিত্বদের বাড়ি-ঘর বিক্ষোভকারীরা ঘিরে রাখে। যারা দীর্ঘদিন দেশের অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন।
এ দিকে গেজেট প্রত্যাহারে পিছনে ক্ষমতাসীন জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ২২৫ সদস্যের সংসদে ৪০ জনেরও বেশি এমপি ক্ষমতাসীন জোট থেকে বেরিয়ে যান বা ইস্তফা দেন। কারণ, দেশে মূল্যবৃদ্ধি আকাশ ছুঁয়েছে৷ জ্বালানি, খাবার, ওষুধ অমিল৷ যতটুকু পাওয়া যাচ্ছে সেগুলি চড়া দামে কিনতে হচ্ছে৷ এক কিলোগ্রাম দুধ বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ টাকা দরে৷ চালের দাম ২২০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম৷ সরকারের বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ারে টান পড়ায় খাদ্যপণ্য, জ্বালানি আমদানি করতে পারছে না শ্রীলঙ্কা সরকার৷ তাই জনরোষ আছড়ে পড়ে প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের উপর৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শুক্রবার রাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন তিনি৷ ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়৷ তখন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেশে দাবালনের মতো ছড়াতে শুরু করে ক্ষোভ৷ তাই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের নির্দেশ দেয় গোতবায়া সরকার৷ এ নিয়েও শোরগোল শুরু হওয়ায় ১৫ ঘণ্টা পর ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করে দেওয়া হয়৷ তারপর রবিবার রাতে মন্ত্রিসভার ২৬ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন৷