কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: শ্রীলঙ্কায় সরকার-বিরোধী প্রতিবাদীদের উপর দমন-পীড়নের কড়া ভাষায় নিন্দা করল দেশের মানবাধিকার কমিশন (HRCSL)। শুক্রবার এক বিবৃতিতে কমিশন বলেছে, এরকম নির্মম ও ঘৃণ্য আচরণের তারা তীব্র নিন্দা করছে। মধ্যরাত থেকে শুরু হয়ে সারারাত ধরে চলা সেনাবাহিনীর অত্যাচারের কঠোর সমালোচনা করেছে কমিশন। কমিশনের চেয়ারপার্সন শ্রীলঙ্কা সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রোহিনী মারাসিঙ্ঘের স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যাদের নির্দেশে সেনাবাহিনী শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদীদের উপর হামলা চালিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শুধু তাই নয়, এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে। এই ঘটনাকে মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে বর্ণনা করেছে কমিশন। সরকারি তদন্ত ছাড়াও কমিশন তাদের তরফে এই ঘটনায় পৃথক তদন্ত করবে বলেও জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রোহিনী মারাসিঙ্ঘে।
রনিল শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই আন্দোলন ফের তীব্র হয়েছে। পুলিস ও নিরাপত্তাকর্মীরা আন্দোলন দমাতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। শুক্রবার ভোররাত থেকে পুলিসি নির্যাতন শুরু হয়েছে আন্দোলনকারীদের উপর। বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে লঙ্কাবাহিনী আন্দোলনকারীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ব্যাপক ধস্তাধস্তি, মারধর করে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের প্রধান শিবির তছনছ করে সেখান থেকে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। রেয়াত করা হয়নি সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদেরও। বেশ কয়েকজনকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করেছে পুলিস। প্রায় মাস তিনেক ধরে বিক্ষোভকারীরা এখানে ঘাঁটি গেড়ে ছিল।
Dinesh Gunawardena: শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন দীনেশ গুণবর্ধনে
সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, মধ্যরাত নাগাদ শয়ে শয়ে পুলিস ও সেনাবাহিনী ট্রাকে ও বাসে করে সেখানে আসে। নেমেই তারা আন্দোলনকারীদের শিবিরগুলি ভাঙতে শুরু করে। প্রতিবাদী পোস্টারগুলি ছিঁড়ে দেয়। সেই সময় কর্তব্যরত ২ সাংবাদিককে তারা রাস্তায় ফেলে মারে। একইভাবে ২ আইনজীবীকেও বিনা প্ররোচনায় মারধর করা হয় বলে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার বার অ্যাসোসিয়েশন। ওই ২ আইনজীবী তাদের মক্কেল আন্দোলনকারীদের ডাকে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সাধারণ নাগরিকের উপর এরকম অযৌক্তিক ও বিনা প্ররোচনায় হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার তাঁরা দেশব্যাপী কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদ নয়া সরকারের ইস্যুতেই। তাঁরা গত ১০৪ দিন ধরে যে লড়াই চালাচ্ছেন, সেই পুরনো মদই এখন নতুন বোতলে সরবরাহ হচ্ছে। তাঁদের এক মুখপাত্র বলেন, জনসাধারণের সংসদ গঠন করাই আমাদের লক্ষ্য। তা হাসিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে। বিক্রমসিঙ্ঘে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরাও জমি ছাড়ব না।