কলম্বো: রনিল বিক্রমসিঙ্ঘেকে নিয়ে গণ-অভ্যুত্থানকারীদের আপত্তি আগে থেকেই ছিল। সেই রনিল শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই আন্দোলন ফের তীব্র হয়েছে। পুলিস ও নিরাপত্তাকর্মীরা আন্দোলন দমাতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। শুক্রবার ভোররাত থেকে পুলিসি নির্যাতন শুরু হয়েছে আন্দোলনকারীদের উপর। কারণ, এদিনই বেলায় শপথ নেবে বিক্রমসিঙ্ঘে মন্ত্রিসভা। যতদূর জানা যাচ্ছে, দীনেশ গুণবর্ধনে প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন।
বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে লঙ্কাবাহিনী আন্দোলনকারীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ব্যাপক ধস্তাধস্তি, মারধর করে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের প্রধান শিবির তছনছ করে সেখান থেকে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। রেয়াত করা হয়নি সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদেরও। বেশ কয়েকজনকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করেছে পুলিস। প্রায় মাস তিনেক ধরে বিক্ষোভকারীরা এখানে ঘাঁটি গেড়ে ছিল।
আরও পড়ুন: Partha Chatterjee ED: পার্থ, পরেশের বাড়িতে ইডির হানা, শিক্ষক নিয়োগে বিপুল টাকার লেনদেন?
সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, মধ্যরাত নাগাদ শয়ে শয়ে পুলিস ও সেনাবাহিনী ট্রাকে ও বাসে করে সেখানে আসে। নেমেই তারা আন্দোলনকারীদের শিবিরগুলি ভাঙতে শুরু করে। প্রতিবাদী পোস্টারগুলি ছিঁড়ে দেয়। সেই সময় কর্তব্যরত ২ সাংবাদিককে তারা রাস্তায় ফেলে মারে। একইভাবে ২ আইনজীবীকেও বিনা প্ররোচনায় মারধর করা হয় বলে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার বার অ্যাসোসিয়েশন। ওই ২ আইনজীবী তাদের মক্কেল আন্দোলনকারীদের ডাকে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সাধারণ নাগরিকের উপর এরকম অযৌক্তিক ও বিনা প্ররোচনায় হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার তাঁরা দেশব্যাপী কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন।
এর মধ্যেই দেশের পার্লামেন্টের সংখ্যালঘু দলের নয়া প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে এদিনই নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করতে চলেছেন। পুরনো মন্ত্রিসভায় যাঁরা ছিলেন, তাঁরাই আপাতত ঠাঁই পেতে চলেছেন। তবে দীনেশ গুণবর্ধনে সম্ভবত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। গোতাবায়া রাজাপক্ষে পার্লামেন্টের দলনেতা ৭৩ বছর বয়সি গুণবর্ধনেকে গত এপ্রিলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে বসিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বিদেশমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী হিসেবেও কাজ করেছেন।
আন্দোলনকারীদেরও প্রতিবাদ এই ইস্যুতেই। তাঁরা গত ১০৪ দিন ধরে যে লড়াই চালাচ্ছেন, সেই পুরনো মদই এখন নতুন বোতলে সরবরাহ হচ্ছে। তাঁদের এক মুখপাত্র বলেন, জনসাধারণের সংসদ গঠন করাই আমাদের লক্ষ্য। তা হাসিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে। বিক্রমসিঙ্ঘে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরাও জমি ছাড়ব না।