মারিউপোল: রুশ বাহিনীর গোলায় (Russian strike In Ukraine) বৃহস্পতিবারই ধূলিস্মাৎ হয়ে গিয়েছে ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিউপোলের নামী একটি থিয়েটার (Ukraine theatre bombing) হল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রুশসেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের (war crimes) আরও জোরালো আওয়াজ তুলল ইউক্রেন। পুতিন বাহিনীর হামলার হাত থেকে বাঁচতে মারিউপোল শহরের এই থিয়েটার হলে সাধারণ মানুষজনের অনেকেই আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু রুশগোলায় রাতারাতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে থিয়েটার হলটি। ইতালির সংস্কৃতি মন্ত্রী দারিও ফ্রান্সচিনি শুক্রবার জানান, সম্মতি পেলে যত দ্রুত সম্ভব এই থিয়েটারটি পুনর্নির্মাণ করে দিতে চায় তাঁর দেশ।
থিয়েটার হলের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে ঠিক কত জন মারা গিয়েছেন বা আহত কত, মারিউপোল প্রশাসন তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও উদ্ধারকাজ শেষ হয়নি। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে থাকা জীবিতদের সন্ধানে মরিয়া উদ্ধারকারীরা।
ইউক্রেনের ন্যায়পাল লিউডমিলা ডেনিসোভা এখনও আশাবাদী। কারণ, থিয়েটার হলটির বেসমেন্ট সুরক্ষিত রয়েছে। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ভূগর্ভস্থ সেই আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছনোর পথ পরিষ্কার করছেন উদ্ধারকারীরা। তাঁর ধারণা, অনন্ত ১০০০ শরণার্থী সেখানে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: Russia Shelling Ukraine: রুশ শেলিংয়ে ইউক্রেনে প্রাণ হারাল ২১ জন
ইউক্রেনের আবাসিক ভবনগুলিতে রুশসেনা যে ভাবে পরপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে রাশিয়ার মিত্র দেশগুলিও বিড়ম্বনায় পড়েছে। এমনকী চীনও রুশসেনার এই কাণ্ডজ্ঞানহীন কার্যকলাপের নিন্দা করেছে। রাশিয়ার ‘আগ্রাসন’কে সমর্থন করলে চীনকেও চরম মাশুল চোকাতে হবে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপি-এর উদ্দেশে আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। রাশিয়ার আর এক মিত্র ভারতের উপরও একই সঙ্গে চাপ সৃষ্টি করছে জো বাইডেন প্রশাসন।
মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বক্তব্য, পুতিন বাহিনী সাধারণ মানুষের উপর যে ভাবে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে, তার পর আর দাবি করা যায় না রুশসেনা যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত নয়।
মারিউপোলের স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, শহরের আবাসিক এলাকায় রুশ হামলার জেরে কমপক্ষে ২০০০ জন মারা গিয়েছেন। নিহতদের ৮০ শতাশের ঘরবাড়ি ধূলিস্মাৎ হয়ে গিয়েছে রুশ গোলার আঘাতে। বন্দর শহর ছেড়ে পালানো এক শরণার্থীর কথায়, ‘রাস্তাজুড়ে কয়েক’শো সাধারণ মানুষের মৃতদেহ বেওয়ারিশ হয়ে পড়ে রয়েছে। মারিউপোল আর মারিউপোল নেই, জাহান্নমে পরিণত হয়েছে!‘
রুশসেনার বাধায় উদ্ধারকাজও ঠিকমতো চালানো যাচ্ছে না, ইউক্রেনের তরফে এমন অভিযোগও উঠেছে। বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে যোগাযোগের নানা উপায়। এমনকী যুদ্ধের জেরে বুভুক্ষু মানুষের কাছে খাবারটুকু পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: ICJ Ukraine-Russia: রাশিয়াকে সেনা অভিযান বন্ধের নির্দেশ আন্তর্জাতিক আদালতের
ইউক্রেনের এক সাংসদ সের্গি তারুতার অভিযোগ, রুশ বাহিনী ইউক্রেনের একাধিক শহর অবরোধ করে রেখেছে। জুরুরি সরঞ্জাম নষ্ট করে উদ্ধারকাজে অনবরত বাধা দিয়ে যাচ্ছে।
ইউক্রেনের দাবি, স্থলপথে রুশসেনা এঁটে উঠতে পারছে না। যে কারণে আকাশপথে মুহুর্মুহু হামলা চালানো হচ্ছে। দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। পেন্টাগনের দাবি অনুযায়ী, যুদ্ধের তিন সপ্তাহে ইউক্রেন লক্ষ্য করে কমপক্ষে ১০০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।