কিভ: রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কূটনৈতিক ভাবে কোণঠাসা করতে মরিয়া ভলোদিমির জেলেনস্কি। আমেরিকা ও ব্রিটেনকে প্রথম থেকেই পাশে পেয়েছেন জেলেনস্কি। জো বাইডেনের সঙ্গে সদ্ভাব থেকে পশ্চিমি দেশের আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও পড়তে হয়েছে রাশিয়াকে। প্রতিবেশী বন্ধু দেশ পোল্যান্ড, রোমানিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেও ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে ফোনে কথা হয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের। আবাসিক এলাকায়, হাসপাতালে হামলা চালিয়ে রাশিয়া কী ভাবে ‘যুদ্ধাপরাধ’ করছে, তার বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন জেলেনস্কি। রাশিয়ার এই আগ্রাসনকে ‘সন্ত্রাস’ বলে উল্লেখ করেছেন। পুতিন বাহিনীর এই ‘আগ্রাসন’ চাক্ষুষ করতে মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য তিন দেশের রাষ্ট্রনেতা কিভে ঘুরে গেলেন।
সূত্রের খবর, পোল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও চেক রিপাবলিকের রাষ্ট্রপ্রধানরা ঝুঁকি উপেক্ষা করে এ দিন যুদ্ধবিধ্বস্ত কিভ নগরী ঘুরে দেখেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে তাঁদের বৈঠকও হয়। দু’দিন আগেই ফোনে পোল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধানকে ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানিয়েছিলেন জেলেনস্কি। তার পরেই কিভ শহরের ধ্বস্ত চেহারা চাক্ষুষ করতে আসেন এই তিন দেশের রাষ্ট্রনেতা।
রুশ বাহিনীর একের পর এক হামলার জেরে খারকিভ, মারিউপোলের মতো শহরগুলো বর্তমানে আক্ষরিক অর্থেই ধ্বংসনগরী। লোকজন শহর ছেড়ে পালিয়েছেন। বাতাসে বারুদ পোড়ার গন্ধ। চারপাশে যেন শ্মশানের নিস্তব্ধতা। পুতিন বাহিনীর এখন লক্ষ্য কিভ। অপারেশন কিভ সফল করতে চারপাশ থেকে রাজধানী শহরটিকে ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনা। ক্রমশ তারা মধ্য কিভের দিকে এগোচ্ছে। আরও জোরদার সংঘর্ষের আশঙ্কায় মঙ্গলবার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ১১টা থেকে কিভে কারফিউ জারি হতে চলেছে। এমন একটা সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত তিন দেশের রাষ্ট্রনেতার কিভ সফর তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: India-Pakistan: পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের মিসাইল, তদন্তে কেন্দ্রীয় সরকার
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সহজে হাল ছাড়ার পাত্র নন। রাশিয়ার দম্ভে খোঁচা দিয়ে ঘোষণা করেছেন, কিভ দখল পুতিন বাহিনীর জন্য এত সহজ হবে না। সহজ যে হবে না, প্রতিরোধের মুখে পড়ে রুশসেনাও তা বুঝতে পারছে। যুদ্ধ চলাকালীন গত তিন সপ্তাহে অন্তত তিন বার জেলেনস্কিকে হত্যার ষড়যন্ত্র পণ্ড হয়েছে। তাঁর উপর আবারও রুশ হামলা হতে পারে, এই আশঙ্কায় নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু জেলেনস্কি কিভ ছাড়তে রাজি হননি। ইউক্রেনীয় সেনা ও সে দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে সামনের কয়েক দিন আরও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।