ওয়েব ডেস্ক: আমেরিকার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মধ্যপ্রাচ্যে বুক চিতিয়ে লড়ছে ইরান (Iran)। ইজরায়েলের (Israel) পর আমেরিকাকেও (USA) পাল্টা জবাব দিয়েছে খামেনির (Ali Khamenei) দেশ। “যুদ্ধবিরতি নয়, আরও মারব,” ইরানের তরফে এমনই হুঁশিয়ারি উঠে এসেছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধে মাথা নোয়াতে রাজি নয় ইরান। কিন্তু কীসের ক্ষমতায় বিশ্বের সুপারপাওয়ারের সামনেও শিরদাঁড়া সোজা রেখেছে ইরান। জানলে অবাক হবেন, ইরানের এই রহস্যময় শক্তির নেপথ্যে রয়েছে সাত কারণ। কী কী কারণ?
১. হরমুজ প্রণালী: এই প্রণালী ইরানকে জিওপলিটিক্যাল মঞ্চে একধাপ এগিয়ে রেখেছে। পৃথিবীর পাঁচ ভাগের একভাগ তেল পরিবাহিত হয় ৩৩ কিমি চওড়া এই জলপথ দিয়ে। এই হরমুজ প্রণালী এবং এর চারপাশের সাতটি দ্বীপ এখন ইরানের নিয়ন্ত্রণে। এই প্রণালীর জন্য ইরানের দরবারে প্রায় সব দেশকেই আসতে হবে।
আরও পড়ুন: “কোনও যুদ্ধবিরতি নয়,” ট্রাম্পের দাবিকে নস্যাৎ করে হুঁশিয়ারি ইরানের
২. ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন: ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ২০০০ কিলোমিটার দূরে গিয়েও আঘাত হানতে পারে। শুধু ইজরায়েল নয়, ইউরোপেরও একাধিক শহর এর আওতায় পড়ে। এছাড়া, ইরান কম খরচে অত্যাধুনিক ও কার্যকর ড্রোন নির্মাণে পারদর্শী। অস্ত্রের দিক দিয়েও ইরানকে এগিয়ে রাখা যায়।
৩. পাহাড় ও মরুভূমির প্রাকৃতিক দুর্গ: পশ্চিম ও দক্ষিণে জাগরোস পর্বতমালা এবং উত্তরে আলবোর্জ পর্বত ইরানকে প্রায় দুর্ভেদ্য করে তোলে। কেউ যদি এই পর্বত পার কর ঢোকেও, তাহলে সামনে পড়বে লুত মরুভূমি। বিশ্বের সবচেয়ে গরম ও শুষ্ক জায়গাগুলোর একটি এটি। অর্থাৎ, স্থলপথে ইরানে হামলা চালানো প্রায় অসম্ভব।
৪. রাশিয়া ও চীনের মতো বন্ধু: ইরানের সঙ্গে কৌশলগত মৈত্রী রয়েছে রাশিয়া ও চীনের। এই দুই শক্তিধর দেশ যুদ্ধক্ষেত্রে সরাসরি না এলেও প্রযুক্তি, গোয়েন্দা তথ্য এবং কূটনৈতিকভাবে ইরানের পাশে দাঁড়াচ্ছে।
৫. প্রাকৃতিক সম্পদ: বিশ্বের মোট তেলের প্রায় ১০ শতাংশ এবং গ্যাসের ১৫ শতাংশ মজুত রয়েছে ইরানে। এই বিপুল সম্পদ শুধু দেশের অর্থনৈতিক ভিতকে মজবুত করে।
৬. ছায়াযুদ্ধের সাম্রাজ্য: ইরান সরাসরি যুদ্ধ না করেও শত্রুর ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে পারে তার ‘প্রক্সি’ বাহিনীর মাধ্যমে। হামাস, হিজবুল্লাহ, হুথি, ফাতেমিয়ুন ব্রিগেড এবং আল বদর মিলিশিয়া— এই সব সংগঠনগুলি পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের হয়ে ছায়াযুদ্ধে লিপ্ত।
৭. ভৌগলিক অবস্থান: ইরান এমন এক জায়গায় অবস্থিত, যা ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার সংযোগস্থল। উত্তরে কাস্পিয়ান সাগর, দক্ষিণে পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগর— এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জলসীমা ইরানের গুরুত্ব বহুগুণ বাড়িয়েছে। গত ৫০০ বছরে একাধিক পরাশক্তি ইরান দখলের চেষ্টা করেছে, কিন্তু কেউ সফল হয়নি।
দেখুন আরও খবর: