ওয়াশিংটন: প্রাইমেটদের (Primates) নিয়ে এ যাবৎ সবথেকে সেরা জিনগত গবেষণা হল। প্রাইমেট কী আগে জানা দরকার। প্রাইমেট হল সেই সব স্তন্যপায়ী যাদের হাত-পা নমনীয়, দৃষ্টিশক্তি ভালো এবং উন্নততর মস্তিষ্ক রয়েছে। লেমুর, বাঁদর (Monkeys), এপ (Apes) এবং মানুষও এই প্রাইমেটদের দলেই পড়ে। নতুন গবেষণায় জিনগত কিছু মনুষ্য বৈশিষ্ট্য পাওয়া গিয়েছে। সবথেকে কাছাকাছি প্রজাতি শিম্পাঞ্জির (Chimpanzee) থেকে ঠিক কবে আলাদা হয়ে গেল তা নিয়েও জানা গিয়েছে অনেক কিছু।
গবেষকরা জানিয়েছেন, তাঁরা ২৩৩টি প্রাইমেট প্রজাতির জিনোম সিকোয়েন্সিং এবং বিশ্লেষণ করেছেন, যার মধ্যে আজ জীবিত প্রায় অর্ধেক, এবং আশ্চর্যজনকভাবে আবিষ্কার করেছেন যে বেশিরভাগেরই জেনেটিক বৈচিত্র্য প্রচুর। এই বৈচিত্র হল একই প্রজাতির মধ্যেই কিছু পরিবর্তিত রূপ যা বদলে যাওয়া পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে।
কিছু জেনেটিক বৈশিষ্ট্য আগে মনে করা হত শুধুমাত্র মানুষের মধ্যে রয়েছে। নতুন গবেষণায় তা অন্য প্রাইমেটদের মধ্যেও পাওয়া গিয়েছে। প্রাইমেট জিনোমকে কাজে কাগিয়ে ট্রেন করা হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) অ্যালগোরিদমকে যা মানুষের জেনেটিক মিউটেশনের কারণে হওয়া রোগের পূর্বাভাস দেবে।
আরও পড়ুন: Iraqi Archeological Marvels | বালিতে চাপা পড়ছে ইরাকের প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ, নেপথ্যে জলবায়ু পরিবর্তন
বার্সেলোনা বায়োমেডিকেল রিসার্চ পার্কের ইন্সটিটিউট অফ ইভোল্যুশনারি বায়োলজি ইন স্পেনের জিনোমিসিস্ট লুকাস কুডেরনা বলেন, প্রাইমেট জিনোমিক বৈচিত্র্য অধ্যয়ন করা শুধুমাত্র বর্তমান জীববৈচিত্র্য সংকটের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, মানুষের রোগ সম্পর্কে আমাদের ধারণার উন্নতি হওয়ারও বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।” সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা প্রবন্ধের প্রধান লেখক কুডেরনা।
পৃথিবীতে ৫০০-র বেশি প্রজাতির প্রাইমেট রয়েছে। লেমুর, লরিস, টারসিয়ের, পুরনো এবং নতুন যুগের বাঁদর, ওরাংওটাং, শিম্পাঞ্জি এবং বোনোবোর মতো গ্রেট এপ। লেমুর এবং লরিসের সঙ্গে মানুষের সাদৃশ্য সবথেকে কম। কুডেরনা জানান, প্রাইমেট হল স্তন্যপায়ী প্রাণীদের একটি বৈচিত্র্যময় ক্রম যার মধ্যে আমরা মানুষরাও রয়েছি। বড় মস্তিষ্ক, উচ্চ দক্ষতা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য দিয়ে এদের চিহ্নিত করা হয়। বেশিরভাগ প্রজাতির বুড়ো আঙুল নড়াচড়ায় সক্ষম, ভালো দৃষ্টিশক্তি। তারা আমেরিকা, মাদাগাস্কার সহ আফ্রিকা এবং এশিয়ায় বসবাস করে।
জিনগতভাবে মানুষের সঙ্গে সবথেকে সাদৃশ্য রয়েছে শিম্পাঞ্জি এবং বোনোবো। মানুষের ডিএনএ-র প্রায় ৯৮.৮ শতাংশ রয়েছে তাদের ডিএনএ-তে। প্রসঙ্গত, বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে দিয়ে বিবর্তিত হতে হতে ৩,০০,০০০ বছর আগে আফ্রিকায় হোমো সেপিয়েন্স (Homo Sapiens) প্রজাতির উদ্ভব। তারপর গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে তারা।