কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: চাদের প্রাক্তন কুখ্যাত শাসক হিশেন হাবরের মৃত্যু হল সাজাপ্রাপ্ত অবস্থায়। বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। শাসক থাকার সময়ে দেশবাসীর ওপর অকথ্য অত্যাচারের জন্য তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন বিচারক। করোনার থাবায় মৃত্যু হল স্বেচ্ছাচারী এই শাসকের।
মধ্য আফ্রিকার ছোট্ট একটা দেশ চাদ। সেখানেই ১৯৮২ থেকে ৯০ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন হিশেন হাবরে। এই ৮ বছর ক্ষমতায় থাকার সময়ে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ চালিয়ে গিয়েছেন স্বৈরাচারী শাসক। ২০১৬ সালে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে সেনেগালের আদালত। সেই প্রথম আফ্রিকান ইউনিয়ন সমর্থিত আদালতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য একজন শাসকের বিচার হয়।
তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ১৯৯০ সালে দেশের লোকেরা তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন প্রায় ৪০ হাজার লোককে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খুন এবং ২ লাখেরও বেশি লোককে নির্যাতন করেন। ১৯৯০ এ বিরোধীদের দ্বারা উৎখাত হয়ে তিনি সেনেগালে আশ্রয় নেন। এর প্রায় দু দশক পরে চাদের এক আদালত নাগরিকদের ওপর নৃশংস অত্যাচারের জন্য তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। যদিও তিনি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করে গিয়েছেন।
বিচার চলাকালীন হিশেন হাবরে
চাদের রাজধানী এনজামেনা। সেখানের একটি সুইমিং পুলকে আটক কেন্দ্র বানিয়ে তোলেন কুখ্যাত ওই শাসক। অত্যাচারী ওই শাসক নাগরিকদের বৈদ্যুতিক শক, সিগারেটের ছ্যাকা এমনকি চোখে গ্যাস ঢুকিয়ে নির্মমভাবে অত্যাচার করতেন। নিগৃহীত হওয়া লোকজন এবং তাঁদের পরিবারের লোকেরা বার বার সেনেগালে দরবার করতে থাকেন। এরপর বাধ্য হয়ে আফ্রিকান ইউনিয়ন প্রাক্তন নেতার বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের চুক্তি স্বাক্ষর করে।
আরও পড়ুন: কাবুল থেকে ভারতে আসা ধর্মগ্রন্থ ‘গুরু গ্রন্থ সাহিব’ মাথায় করে নিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
১৯৮২ সালে গৌকৌনি ওউদেদির কাছ থেকে চাদের ক্ষমতা দখল করে মসনদে বসেন হাবরে। দেশের উত্তরে লিবিয়া অবস্থান করছে। তাদের থেকে সীমানা বাঁচাতে ফ্রান্স, ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র সহায়তা পেয়েছিলেন হাবরে। লিবিয়ার তৎকালীন নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির বিরুদ্ধে বুলওয়ার্ক হিসেবে সিআইএ তাকে সমর্থন করেছিল।
মধ্য আফ্রিকায় চাদের ঠিক উত্তরে রয়েছে লিবিয়া
ক্ষমতায় বসেই তিনি নারকীয় অত্যাচার শুরু করেন। ক্ষমতার লোভে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন, নারীদের যৌনদাসীতে পরিণত করেছিলেন। এ বছর এপ্রিল মাসে করোনা আক্রান্ত হওয়ায় হাবরেকে দু’মাসের জন্য জেল থেকে ছাড়ার অনুমতি দিয়েছিলেন জেলার। মঙ্গলবার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন তাঁর স্ত্রী।
আরও পড়ুন: ফিরল বামিয়ানের স্মৃতি, ঐতিহাসিক গজনি গেট ধ্বংস করল তালিবান