প্যারিস: পুলিশের গুলিতে কিশোরের মৃত্যুর প্রতিবাদে টানা চারদিন অগ্নিগর্ভ অবস্থা ফ্রান্সের (France)। অল্পবয়সি ছেলেরা জায়গায় জায়গায় সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করছে, পুড়িয়ে দিচ্ছে গাড়ি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রঁর (Emanuel Macron) দাবি, ভিডিয়ো গেল খেলার ফলেই দাঙ্গা করার প্রবৃত্তি দেখা যাচ্ছে কিশোরদের মধ্যে। আপৎকালীন বৈঠকের পর মাক্রঁ বলেন, “কখনও কখনও মনে হচ্ছে, ভিডিয়ো গেমের বিষে আসক্ত হয়ে ওই গেমে যা করে তা-ই রাস্তায় করছে ওরা।”
গ্রেফতার হওয়া ছেলেদের অধিকাংশের বয়স খুব কম, তাই বাবা-মায়েদের সতর্ক হতে বলছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট, বলছেন সন্তানকে ঘরে রাখতে। মাক্রঁ বলেন, ওদের ঘরে রাখা বাবা-মায়েদের দায়িত্ব এবং এই দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করা সবার মনের শান্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্টের আরও অভিযোগ, স্ন্যাপচ্যাট (Snapchat), টিকটকের (Tiktok) মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দাঙ্গার পরিকল্পনা কার্যকর করা হচ্ছে, তাই সংবেদনশীল কন্টেন্ট দেখলেই তা মুছে ফেলার আবেদন করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: France Unrest | দাঙ্গা ঠেকাতে আরও ৪৫,০০০ সেনা মোতায়েন করল ফ্রান্স সরকার
পুলিশের গুলিতে নাহেল নামে ১৭ বছর বয়সি এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছিল। নিম্ন-আয়সম্পন্ন বিভিন্ন জাতি ও বর্ণের মানুষের বহু দিন ধরে পুলিশি কর্মকাণ্ড এবং জাতিগত বিদ্বেষ নিয়ে ক্ষোভ এই মৃত্যুতে আগ্নেয়গিরির মতো ফেটে পড়েছে। নাহেল ন্যান্তেরে শহরতলিতে থাকত, সেখানকার মেয়র জানিয়েছেন, শনিবার নাহেলকে শনিবার কবর দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, বিক্ষোভ সামলাতে মধ্যপন্থ নিয়েছেন মাক্রঁ, অতিরিক্ত দমন পীড়নের নীতি কিংবা একেবারেই গাছাড়া মনোভাব কোনটাই দেখাননি। তবে এবার কঠোর হচ্ছেন তিনি।
পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে এবার সাঁজোয়া গাড়ি সহ ৪৫,০০০ পুলিশ মোতায়েন করল ইমানুয়েল মাক্রঁর (Emanuel Macron) সরকার। ক্র্যাক পুলিশ ইউনিট (Crack Police Unit) এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী (Security Forces) গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সামিট (EU Summit) ছেড়ে দ্রুত দেশে ফিরে গিয়েছেন মাক্রঁ, ফিরেই জরুরিকালীন বৈঠকে বসেছেন। তাঁর দাবি, একটা বয়ঃসন্ধির ছেলের মৃত্যুতে যে রাজনীতি হচ্ছে তা গ্রহণযোগ্য নয়।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন গানের অনুষ্ঠান সহ সমস্ত বড় ইভেন্ট বাতিল করে দিয়েছেন। যে সব জায়গায় বাস-ট্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেখানে রাত ৯টার পর পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গোটা ফ্রান্সে বাজি, দাহ্য তরলের বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দাঙ্গা বাঁধাচ্ছে যারা তাদের অধিকাংশই কিশোর বয়স্ক। অপ্রাপ্তবয়স্ক দাঙ্গাবাজদের সামলাতে তাদের বাবা-মায়েদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মাক্রঁ।