কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: হাঙর-ডলফিনের (shark-dolphin) গর্ভবতী পূর্বসুরির পূর্ণাঙ্গ জীবাশ্ম (Fossil) মিলল। বিজ্ঞানীদের ভাষায় যার নাম ‘ফিওনা’ (Fiona)। ৪ মিটার লম্বা এই জীবাশ্মটির পাওয়া গিয়েছে চিলির (Chile) প্যাটাগোনিয়া এলাকার বিপদসঙ্কুল টিন্ডাল হিমবাহে। চিলির বিজ্ঞানীদের দাবি, এই জীবাশ্মটি বিশ্বের পূর্ণাবয়ব ইখ্টোসরের (Ichthyosaur) অন্যতম একটি। সামুদ্রিক সরীসৃপ (Marine Reptile) প্রজাতির এই প্রাণীটি আনুমানিক ৯ থেকে ২৫ কোটি বছর আগে জলে খেলা করে বেড়াত। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই ফসিল উদ্ধারের মধ্য দিয়ে ইখ্টোসর প্রজাতির বিবর্তন ও বিলুপ্তির গবেষণায় অনেক কাজে আসবে।
জীবাশ্মবিদরা কাজ করছেন
ফসিলটি আবিষ্কার করেছেন জুডিথ পার্দো (Judith Pardo)। তিনি বলেন, প্রায় ১৩-১৪ কোটি বছর আগের ইখ্টোসরের এই গর্ভবতী অবস্থার পূর্ণাঙ্গ ফসিল এর আগে উদ্ধার হয়নি। এই অবস্থার ফসিল উদ্ধার তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: Taj Mahal: তাজমহলের বন্ধ ঘরগুলি খোলা হবে না, পিটিশন খারিজ এলাহাবাদ হাইকোর্টের
ম্যাগানালেস বিশ্ববিদ্যালয়ের জিএআইএ অ্যান্টার্টিক গবেষণা কেন্দ্রের জীবাশ্মবিদ পার্দো ফসিলটি আসলে আবিষ্কার করেন বছর দশের আগেই। কিন্তু, যেখানে এটি পাওয়া গিয়েছিল সেখান থেকে গোটা ফসিলটি তুলে নিয়ে আসা দুষ্কর ছিল। ভয়ঙ্কর প্রতিকূল আবহাওয়া, দুর্গম এলাকা হওয়ায় ফসিলটিকে অক্ষত অবস্থায় নিয়ে আসাই ছিল চ্যালেঞ্জের।
বিজ্ঞানীরা টানা ৩১ দিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে জীবাশ্মটি উদ্ধার করেন এবং সেটিকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে আসা হয়। জীবাশ্মবিদরা জানিয়েছেন, ফসিলটিকে অক্ষত রাখতে তাঁরা প্রায় ২০০ কেজি ওজনের পাথরের পাঁচটি টুকরোকে খুঁড়ে ফসিলটি বের করেছেন। যাতে জীবাশ্মটিকে গোটা অবস্থায় আনা যায়। এখন জীবাশ্মটিকে দক্ষিণ চিলির রিও সেকো ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এই প্রজাতির সামুদ্রিক সরীসৃপটি মেসোজোইক যুগের। সরু সুঁচালো মাথা। দেহের পাশে চারটি পাখনা ও উলম্ব লেজবিশিষ্ট এই প্রাণীটিকে ডলফিনের পূর্বপুরুষ বলে মনে করেন অনেকে। সমুদ্রে এরা প্রায় ৪০ কিমি গতিতে সাঁতার দিতে পারত। সরীসৃপ হলেও এরা ডিম পাড়ত না। সরাসরি বাচ্চা দিত। ডায়নোসরের মতোই প্রকৃতির ভয়ঙ্কর কোনও প্রলয়ে অথবা প্রকৃতির পরিবর্তনের খেলায় নিজেকে মানিয়ে নিতে না পারায় এরা বিলুপ্ত হয়ে যায়। এই প্রজাতির আয়ুষ্কাল ছিল প্রায় ৪০ লক্ষ বছর। ইখ্টোসরের প্রথম পূর্ণাঙ্গ কঙ্কালটি পাওয়া যায় ইংল্যান্ডে ১৮৩৪ সালে।