কাবুল: তালিবানের দখলে কাবুল চলে যেতেই আফগানিস্তান ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে৷ হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের বাইরে দিন-রাত অপেক্ষায় আফগানিস্তানের বহু মানুষ৷ কিন্তু কাঁটাতারের বেড়া আর উঁচু পাঁচিল টপকে সকলের পক্ষে বিমানবন্দরে ঢোকা সম্ভব হচ্ছে না৷ বড়রা ঢুকতে না পারলেও বাবা-মায়েরা তাঁদের কোলের সন্তানদের পাঁচিলের ওপারে পাঠিয়ে দিচ্ছেন৷ মনের ভেতর একটাই আকাঙ্খা৷ এই নরক থেকে বেরিয়ে যাক তাঁদের বাচ্চারা৷ বিমানে চেপে পাড়ি দিক কোনও এক দেশে৷ সব ভুলে সেই দেশেই সুন্দর জীবন গড়ে উঠুক তাদের৷
আরও পড়ুন: বিমান থেকে ছিটকে পড়া ছিন্নভিন্ন দেহাংশ মিলল গৃহস্থের ছাদে, দেখেই জ্ঞান হারালেন গৃহকর্ত্রী
তালিবানি শাসনের কথা ভেবেই শিউরে উঠছেন আফগানরা৷ তালিবদের অত্যাচারের সেই বিভীষিকাময় দিনগুলি ২০ বছর আগে খুব কাছ থেকে দেখেছেন তাঁরা৷ সেই অত্যাচারের স্মৃতি এখনও মনে গেঁথে রয়েছে৷ ২০ বছর আগের কিশোর-কিশোরীরা এখন সন্তানের বাবা-মা৷ তাই সন্তানরাও ওই বিভীষিকায় দিনগুলি দেখে বড় হোক চান না তাঁরা৷ এজন্য সন্তানের থেকে বিচ্ছেদও সইতে রাজি বাবা-মায়েরা৷ সন্তান যাতে নিরাপদে থাকে সেটাই তাঁদের একমাত্র চাওয়া-পাওয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কিন্তু এ বিচ্ছেদও বড়ই পীড়াদায়ক৷ আর হয়তো কোনওদিন ছেলে-মেয়ের মুখ দেখত পাবেন না অভিভাবকরা৷ তাই পাঁচিলের এপার থেকে সন্তানদের ঠেলে ওপারে পাঠিয়ে দেওয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়ছেন মায়েরা৷ কাঁদতে কাঁদতে মার্কিন ও ব্রিটেন বাহিনীর কাছে একটাই অনুরোধ করছেন৷ ‘আমার সন্তানকে অন্তত বাঁচান৷’
আরও পড়ুন: চাপের মুখে আফগানিস্তানে সেনা প্রত্যাহার পিছোতে পারেন বাইডেন
কাবুল বিমানবন্দর থেকে এমনই মন ভেঙে দেওয়ার মতো বহু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশাল মিডিয়ায়৷ তাতে দেখা গিয়েছে, ভিড়ের মধ্যে থেকে সন্তানদের গেটের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন বাবা-মায়েরা৷ আরেকটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ১৩ বছরের একটি মেয়ে পাঁচিল টপকে ঢুকছে কাবুল বিমানবন্দরে৷ অন্য একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, বিমানের ভেতর সেনার পোশাক জড়িয়ে ঘুমিয়ে ছোট্ট মেয়ে৷ বিমানবন্দরে বাইরে আর্ত মানুষের চিৎকার, হাহাকার আর কান্নার শব্দ৷ সোশাল মিডিয়ায় এমন করুণ সব দৃশ্য দেখে কেঁদে ফেলছেন নেটিজেনরা৷