কথায় আছে শিবের বাস হিমালয়ে। নেপাল পেরিয়ে কৈলাস পাহাড়ে। আর কে না জানে হিমালয়ের পাহাড়েই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মারিজুয়ানা বা গাঁজা গাছ জন্মায়। ঠিক তেমনই শিবের গাঁজা সেবন নিয়েও বেশ কিছু লোককথা বিশ্বাস বহু যুগ ধরে প্রচলিত।
যেমন নেপাল। ভারতের প্রতিবেশী এই দেশের সঙ্গে গাঁজার শতাব্দী পেরনো সময় ধরে সম্পর্ক। নেপালের সংস্কৃতি, কৃষ্টির সঙ্গে গাঁজার নাম জড়িয়ে। নেপালে মারিজুয়ানা বা গাঁজা সেবন, কেনাবেচা নিষিদ্ধ। কিন্তু নতুন মাদকনীতিতে সেই আইনি-ফাঁস বোধহয় এবার আলগা হচ্ছে। গাঁজার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে চলেছে নেপাল সরকার। গাঁজা উৎপাদন করে ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করার কথা ভাবা হচ্ছে। এমনকি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে রফতানির কথাও ভাবছে নেপাল সরকার।
নেপালের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিরোধ খাতিওড়া। তাঁর কথায়, ‘নেপালে গাঁজা ব্যবহারের পরম্পরা রয়েছে। গাঁজাকে ঔষধি হিসেবে ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। পরিমিত সেবন শরীরের চরম ক্ষতি করে না। আমাদের পূর্বপুরুষেরা গাঁজা ব্যবহার করতেন। নেপালের ধর্মীয় পুঁথিতেও এর উল্লেখ আছে’।
সত্তর দশকের একেবারে শুরুতে নেপালে গাঁজা নিষিদ্ধ হয়। আমেরিকা মাদকের বিরুদ্ধে সে সময় বিশ্বজোড়া বিরোধিতায় নেমেছে। পরে পাশ্চাত্যের বহু দেশই গাঁজা বা ক্যানাবিসের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। নেপাল সরকারের বক্তব্য, নিষেধাজ্ঞার কারণেই চোরাপাচার, অপরাধ, খুন-জখমের পরিসংখ্যান অনেক বেশি। নেপালের মত গরিব দেশে তাই এই নিষেধাজ্ঞা আর চলে না।
আরও পড়ুন- Indian Data Bazar: কোটি কোটি মানুষের তথ্য পাচার, জামতাড়া গ্যাংয়ের নেপথ্যে কারা?
গাঁজার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে নেপালে সামাজিক আন্দোলনও চলছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, ‘একবার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে নেপালের অর্থনীতি আগের তুলনায় চাঙ্গা হবে। গাঁজা থেকে প্রস্তুত ঔষধির মাধ্যমে অসুস্থরাও উপকৃত হবেন। এখনও বহু অসুস্থ সাধারণ মানুষ বেআইনি ভাবে গাঁজার তৈরি ঔষধি ব্যবহার করে থাকেন। যে কোনও সময় তাঁরা পুলিসের হাতে ধরা পড়ে যেতে পারেন। আইন পাস হয়ে গেলে আর সেই ভয় থাকবে না।’