ইরান: একসঙ্গে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিল ইরানের (Iran) সরকার। গত বছর মাহসা আমিনির (Mahsa Amini) মৃত্যুর প্রতিবাদে (Protests) নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত তিন ব্যক্তিকে ইরান সরকার শুক্রবার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। সরকার-বিরোধী আন্দোলনে খামেনেই প্রশাসন এখনও কঠোর ভূমিকা পালন করে চলেছে। শুক্রবার ফাঁসি হওয়া তিন ব্যক্তির নাম মাজিদ কাজেমি, সালেহ মিরহাশেমি, সঈদ ইয়াঘৌবি।
সূত্রের খবর, মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালীন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিহতের ঘটনায় জড়িত ছিলেন ওই তিনজন। গত নভেম্বরে আধা সেনার দুই সদস্যের মৃত্যু হয়। দাবি করা হয় তাঁদের মৃত্যুর পিছনে ওই তিন ব্যক্তি জড়িত। সেই কারণেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল তাঁদের।
এদিকে মানবাধিকার রক্ষাকারী সংস্থা ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালে’র দাবি, ইরানে সরকার-বিরোধী আন্দোলনে জড়িতদের ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে বিচার করা হয়। এই বিচার প্রক্রিয়ায় প্রচুর গলদ থাকে। নির্যাতন করে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। ইরান সরকার অবশ্য এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন : Modi Meets Zelensky | জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক মোদির
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে হিজাব বিতর্কে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইরান। মেয়েরা বাড়ির বাইরে বেরলেই হিজাব পরার আদেশ দিয় ইরান সরকার। এই ব্যক্তিস্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে ইরানের মেয়েরা পথে নেমে আন্দোলন শুরু করেন। এরই মধ্যে ঠিকমতো হিজাব না পরার জন্য মাসা নামে বছর বাইশের এক তরুণীকে অমানবিকভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে। এরপর অবস্থা আরও উত্তাল হয়ে ওঠে। মেয়েরা তাঁদের মাথার চুল কেটে ফেলে, গায়ের পোশাক খুলে প্রতিবাদে পথে নামেন। প্রতিবাদী ভূমিকায় দেখা যায় সে দেশের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরাও। প্রতিবাদ রুখতে কঠোর পদক্ষেপ নেয় ইরান সরকারও। শুধুমাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে একাধিক প্রতিবাদীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
বিদেশি সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, গত বছর ইরানে কমপক্ষে ৫৮২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। যা, ২০১৫ সাল থেকে দেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুদণ্ড বলে জানা গিয়েছে