ঢাকা: ‘বিশ্বের সেরা নতুন ভবনের’ সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেল বাংলাদেশের সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল। রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টস-রিবা আন্তর্জাতিক স্থাপত্য পুরস্কারের তালিকায় স্থান পেয়েছে৷ স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী ৮০ শয্যার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের নকশা করেছেন৷ এর আগে স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী আগা খান স্থাপত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মানুষকে চিকিৎসা দিতে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে চালু হয় ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল। ২০১৩ সালে থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা চার বছর নকশার কাজ করা হয়।
সূ্ত্রের খবর, বিশ্বের ১১টি দেশের মধ্যে ১৬টি ব্যতিক্রমী নতুন স্থাপনা থেকে বাছাই করে এই হাসপাতালকে রিবা আন্তর্জাতিক পুরস্কারের পাঁচ সদস্যের জুরি বোর্ড। জুরি বোর্ড বলছে, সাতক্ষীরার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা দক্ষিণ বাংলার জলো পরিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে।
এই হাসপাতালের বিশেষত্ব, স্থানীয় নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে ভবনটি গড়া হয়েছে৷ এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে প্রচুর আলো-বাতাস চলাচল করতে পারে। বিদ্যুতের সর্বনিম্ন ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। জল সংরক্ষণের জন্য জলাধার রাখা হয়েছে। হাসপাতালের নিরাপত্তা, সহজে যাতায়াত ব্যবস্থাও সুনিশ্চিত করা হয়েছে। স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী বলেন, “আমাদের বলা হয়েছিল যে, হাসপাতালের সব সুবিধা থাকতে হবে৷ কিন্তু বাজেট খুবই কম ছিল। এই হাসাপাতালের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য, কম বাজেটের মধ্যে স্থানীয় উপাদান ও হাতে তৈরি ইট ব্যবহার করা হয়েছে। শ্রমিকরাও স্থানীয়।”
হাসপাতালের ইনডোর এবং আউটডোর দুটি আলাদা জায়গা। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও দুই রকম। ১০ ফুট চওড়া জলাধারের মাধ্যমে ইনডোর এবং আউটডোর আলাদা করা হয়েছে। পুরো হাসপাতালে বৃষ্টির জল ধরে রাখতে জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে৷ অতিরিক্ত জল সামনের পুকুরে যায়। হাওয়া বাতাস চলাচল করতে পারে এমন ভাবেই ওয়ার্ডগুলো নির্মাণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-জম্মু-কাশ্মীর,লাদাখের অবৈধ দখল খালি করুক পাকিস্তান, জাতি সংঘে কড়া বার্তা ভারতের
ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক অসীম ক্রিস্টোফার রোজারিও বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ২৪ ঘণ্টা পরিুষেবা দেওয়া হয়। তিনটি অপারেশন থিয়েটার, নারী-পুরুষের ওয়ার্ড, একটি লেবার ওটি রয়েছে। নিউনেটাল কেয়ার ইউনিটে ইনকিউবেটর সুবিধাসহ নবজাতকদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছাড়াও, বহির্বিভাগে চক্ষু, দন্ত, ফিজিওথেরাপি ইউনিট, পেইন সেন্টার, গাইনি, সার্জারি ইউনিট, সার্ভিক্যাল ক্যান্সার ও ট্রিটমেন্ট সেন্টার রয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আধুনিক ল্যাবও রয়েছে৷ আউটডোরে চিকিৎসকের ফি মাত্র ১০০ টাকা। আর ৩০০ টাকায় বিশেষজ্ঞ কনসালটেন্ট দেখানো যায়। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭২ হাজার মানুষ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা পেয়েছেন।”