ইসলামাবাদ: চাপে পড়েছেন ইমরান খান(Imran Khan)। ইমরান খানের সরকার। যে সে চাপ নয়। প্রবল আর্থিক চাপ। ঘরে-বাইরে দু-দিক থেকেই চাপ সহ্য করতে হচ্ছে। সরকারি খাতে টাকা নেই। বেতন বন্ধ সরকারি কর্মীদের(Pakistan economic recession)। একমাস নয়, মাসের পর মাস বেতনহীন! কূটনীতিক থেকে আমলা কেউ-ই বেতন পাচ্ছেন না। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে। প্রকাশ্যে তাঁরা ইমরান খানের সরকারের নিন্দা করছেন। না করে উপায়ই কী! পাক দূতাবাসের কর্মীদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল থেকে বিতাড়িত! স্কুলে বেতন বাকি। এমত অবস্থায় সার্বিয়া থেকে পাক দূতাবাসের (Pakistan Embassy Serbia) এক কর্মী টুইট করে ইমরানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
তা প্রকাশ্যে আসতেই অস্বতি বেড়েছে ইমরানের নেতৃত্বাধীন পাক সরকারের।
পাকিস্তানে এমন একটা দিন যে আসতে চলেছে, অনেকেই তা আন্দাজ করেছিলেন। সন্ত্রাসবাদীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় দীর্ঘ সময় ধরে আইএমএফের ধূসর তালিকায় পাকিস্তান। বারবার সতর্ক করা হলেও জঙ্গিবাদ নিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি ফেরাতে ব্যর্থ পাকিস্তান। চাপে পড়ে কিছু পদক্ষেপ করলেও আইএমএফকে খুশি করতে পারেনি। ফলে, আন্তর্জাতিক সাহায্য আগেই বন্ধ হয়েছে। তার মধ্যে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের কাছে হাজার হাজার কোটি টাকার দেনার চাপ। প্রধানমন্ত্রীর কুরসির বিড়ম্বনা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন ইমরান খান। আর তাতেই ক্রমশ কঠিনতর হচ্ছে পরিস্থিতি।
এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সরাসরি ইমরান খান সরকারের ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলেছে পাকিস্তানের আমআদমি। বাড়ছে ক্ষোভ। সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়েছে সার্বিয়ায় নিযুক্ত পাক দূতাবাসের টুইটার হ্যান্ডল থেকে পোস্ট হওয়া একটি ভিডিয়ো ঘিরে। সরাসরি আক্রমণ করা হয়েছে ইমরান খানকে।
আরও পড়ুন–সৌদির পর আমেরিকাতেও মিলল ওমিক্রন
দূতাবাসের কর্মীরাই ভিডিয়োটি পোস্ট করেছেন। যার ক্যাপশনে লেখা, ‘মুদ্রাস্ফীতি আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। আপনি, ইমরান খান কত দিন আশা করেন যে আমরা সরকারি কর্তারা চুপ করে থাকব? গত তিন মাস ধরে বেতন না-পেয়ে আপনার জন্য কাজ করব? ফি না দেওয়ার কারণে আমাদের বাচ্চাদের স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এটাই কি নয়া পাকিস্তান?’
সার্বিয়ার পাক দূতাবাস কর্মীদের এই ভিডিয়োটি ইতিমধ্যে ভাইরাল। পাক দূতাবাস কর্মীদের প্রকাশ্যে এমন ক্ষোভ প্রকাশের নজির অতীতে কখনও ঘটেনি। আন্তর্জাতিক মহলেও পাকিস্তানের অর্থনীতির মন্দা এখন চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলেও দূতাবাস কর্মীদের এই ভিডিয়ো নিয়ে চর্চা চলছে। পক্ষে বিপক্ষে একাধিক মত। বিতর্ক শুরু হতে সার্বিয়ার দূতাবাস কর্মীরা আরও একটি টুইট করেন। তাতে লেখা, ‘আমি দুঃখিত ইমরান খান। কিন্তু, এ ছাড়া আমাদের আর কোনও পথ ছিল না।’
আরও পড়ুন–দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরার পর ব্রিটেনে ওমিক্রনে আক্রান্ত ২
কোণঠাসা ইমরান খান সরকারের তরফে এ নিয়ে একটি মন্তব্যও করা হয়নি। তবে ইমরানের সরকারের উপর যে চাপ ক্রমে বাড়ছে, তা স্পষ্ট। পাক অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ইমরানের ভুল নীতি ও ভুল খাতে সরকারি টাকা খরচই পাকিস্তানকে আজ এই সংকটের মুখে এনে দাঁড় করিয়েছে।