কাবুল: আফগানিস্তানে বরাবরই শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগে। সুষম খাদ্য, সুচিকিৎসা, নজরদারি কিছুই মেলে না হাজার হাজার শিশুর ভাগ্যে। অপুষ্টিতে ভুগে সে দেশে শিশু মৃত্যুর ঘটনাও ক্রমশ বাড়ছে। তার মধ্যে গত প্রায় দু’বছরের তালিবান শাসনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়েছে।
ইউনিসেফ বলছে, এই মুহূর্তে তালিবান শাসিত আফগানিস্তানে প্রায় ৩০ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। তার মধ্যে ১০ লাখ শিশু চরম অপুষ্টির শিকার। সেই দেশে ২৬০০ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অপুষ্টি রোগে ভোগা শিশুদের চিকিৎসা চলছে। সেখানেও নানা অব্যবস্থার অভিযোগ রয়েছে। ইউনিসেফ জানাচ্ছে, দেশের পাঁচ বছরের কম বয়সি ৪১ শতাংশ শিশুই অপুষ্টির কারণে খর্বতার শিকার। নয় শতাংশেরও বেশি শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে। প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন শিশুকন্যা রক্তশূন্যতার রোগে জর্জরিত। দেশের অর্ধেক শিশু জন্মের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে মায়ের দুধ পায়। বিরাট সংখ্যক শিশু মায়ের দুধ কী, তাই জানে না। কারণ মায়েরাও মূলত অর্থাভাবের কারণে পুষ্টিকর খাবার খেতে পান না। তাই তাঁরা রক্তাল্পতা-সহ নানা রোগে ভোগেন। ইউনিসেফ আরও বলছে, মাত্র ১২ শতাংশ ৬ থেকে ২৪ মাস বয়সের আফগান শিশু ভালোমতো খেতে পায় না।
বিশেষজ্ঞরা জানান, শিশুদের ক্ষেত্রে খর্বতার নিরিখে আফগানিস্তান হল পৃথিবীর মধ্যে শীর্ষে। শিশুদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে খর্বতা একটা প্রধান বাধা। তারা হীনমন্যতার শিকার হয়। চেহারা ক্রমশ শীর্ণ হতে থাকে। একটুতেই হাফ ধরে যায় তাদের। স্কুলে গিয়েও পড়াশোনায় মন দিতে পারে না। ইউনিসেফ গবেষণায় দেখেছে, বেশির ভাগ আফগান শিশু নষ্টরোগের কবলে পড়ে। এর ফলে তাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্রুত বিকল হয়ে যায়। গত দুবছরে কোভিডের কারণে শিশুদের রোগভোগ আরও বেড়েছে। ইউনিসেফ বলছে, এসব ব্যাপারে তালিবান শাসকদের অনেক যত্নবান হতে হবে।