কাবুল: দেশ ছেড়ে পালাননি আহমেদ মাসুদ। তালিবানের সঙ্গে সংঘাতে পঞ্জাশিরের পতন হলেও এখনও দেশের মাটি আঁকড়ে আফগানিস্থানে পড়ে রয়েছেন তিনি। শনিবার ইরানি সংবাদ সংস্থা ফারসের রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল।
গত কয়েকদিন আগে পঞ্জাশিরে প্রতিরোধ বাহিনীর সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষ হয় তালিবানের। সেই সংঘর্ষে একটি বিরাট এলাকা তালিবান নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে পড়ে। যার ফলে কার্যত পঞ্জাশিরের পতন ঘটে বলেই তালিবানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। সেইসঙ্গে নর্দান অ্যালায়েন্সের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। কারণ প্রতিরোধ বাহিনীর অন্যতম নেতা আহমেদ মাসুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রবল আশঙ্কা দেখা দেয়।
যদিও এমন পরিস্থিতিতে তিনি তুরস্কের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছেন বলে একটি খবর রটেছিল। এবার সেই দাবি উড়িয়ে দিল ইরানি সংবাদমাধ্যমটি।
আরও পড়ুন: ‘৯/১১’, ‘পশ্চিমী চাপেই’ বাতিল হল তালিবান সরকারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
অন্যদিকে, তালিবানি নিয়ন্ত্রণের দাবি উড়িয়ে দেয় নর্দান অ্যালায়েন্স। পঞ্জাশিরে এখনও প্রতিরোধ বাহিনীর প্রভাব যথেষ্টই রয়েছে। উপত্যকার বিভিন্ন জায়গায় তালিবানের বিরুদ্ধে কৌশলগত অবস্থান করে রয়েছে নর্দান অ্যালায়েন্সের সেনানীরা। দাবি নর্দান অ্যালায়েন্স মুখপাত্র কোসেম মোহাম্মদির।
গত ১৫ অগাস্ট কাবুলের পতনের পর সমগ্র আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু উত্তর আফগানিস্তানের পঞ্জাশির একমাত্র প্রদেশ যারা তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই করে চলছিল। জননেতা আহমেদ মাসুদ, প্রাক্তন ভাইস প্রেসিদেন্ট আমরুল্লাহ সালের নেতৃত্বে তালেবানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে নর্দান অ্যালায়েন্স।
অডিও বার্তা মাধ্যমে দেশবাসীকে বিদ্রোহীদের সমর্থন জানানোর আহ্বান জানান আহমেদ মাসুদ। বস্তুত তার ডাকে সাড়া দিয়েছেন দেশ-বিদেশের আফগানেরা।
বিগত কয়েক দিনের লড়াইয়ে উপত্যকায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয় তালিবান। সংঘাতে কমপক্ষে হাজার জন তালিবান জঙ্গি হতাহত হয়েছে বলেও খবর পাওয়া যায়। অন্যদিকে নর্দান অ্যালায়েন্সের ও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। পারস্পারিক এই সংঘাতে পাকিস্তান তালেবানের হয়ে মদদ যোগাচ্ছে বলেও অভিযোগ নেই আহমেদ মাসুদের বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
আরও পড়ুন: নিজেদের বোরখায় ঢেকে তালিবানের সমর্থনে মিছিল শতাধিক মহিলার
যদিও আফগানিস্তানের উত্তরের প্রদেশটির দখল নিতে আলোচনার পথ এই হেঁটেছিল তালিবান। যদিও পারস্পারিক আগ্রাসী মনোভাব সেই আলোচনার ভিতকে দুর্বল করে দিয়েছে বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল। তারপরেই আহমেদ মাসুদের দেশ ছাড়ার খবর সামনে আসতে নড়েচড়ে বসে আফগানবাসি। প্রশ্ন উঠতে থাকে পঞ্জাশিরের ভবিষ্যৎ নিয়েও। এমন অবস্থায় ইরানি সংবাদমাধ্যমের নয়া রিপোর্ট কিছুটা হলেও সেই আশঙ্কা দূর করল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।